সালমান শাহ’র মৃত্যুরহস্য আজও ‍উদঘাটিত হয়নি

, আইন-আদালত

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম | 2023-08-27 02:21:28

তেইশ বছর আগে প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার (ইমন) ওরফে সালমান শাহ’র মৃত্যু রহস্য আজও উদঘাটিত হয়নি। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নিউ ইস্কাটনের একটি ভাড়া বাসায় ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

সালমানের মৃত্যুর পর রাজধানীর রমনা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি।

তার মৃত্যুর পর একে একে থানা-পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি, র‍্যাব মামলাটির তদন্ত করে। মাঝখানে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চলেছে ১২ বছর। প্রতিবারই সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা মর্মে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। আর প্রতিবারই তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দিয়েছেন সালমানের বাবা অথবা মা।

সালমান শাহ’র মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে প্রথম চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে ওই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীতও হয়। কিন্তু চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখান করেন সালমানের বাবা কমর উদ্দিন। তিনি চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করার আদেশের বিরুদ্ধে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করেন।

মামলার এ পর্যায়ে ২০০২ সালে মারা যান কমরউদ্দিন।

২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান মহানগর আদালত। এরপর প্রায় ১২ বছরে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল। দীর্ঘদিন ধরে বাদীপক্ষ আদালতে সাক্ষী হাজির না করায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল বিলম্বিত হয়।

অবশেষে ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনেও সালমান শাহ’র মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

মামলার বাদী কমর উদ্দিন আহমদ চৌধুরী মারা যাওয়ায় সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রত্যাখান করে ফের নারাজি দেন।

নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, নজরুল শেখ, সামিরা হক, লতিফা হক লুসি, ডেভিড, আশরাফুল হক ডন, রাবেয়া সুলতানা রুবি, মোস্তাক ওয়াইদ, আবুল হোসেন খান ও মনোয়ারা বেগম এ ১১ জন সালমান শাহ’র হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি ফের অধিকতর তদন্তে পাঠান মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম। এবার মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাবকে।

র‌্যাবকে তদন্তভার দেওয়া ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মোকদ্দমা দায়ের করে রাষ্ট্রপক্ষ। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েস রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে মামলা তদন্তের নির্দেশ দেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর