ফেরির অপেক্ষায় তিতাসের মৃত্যু: নৌ মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন চাইলেন হাইকোর্ট

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা | 2023-08-27 14:22:03

ফেরিঘাটে এক ভিআইপির (যুগ্ম সচিব) অপেক্ষায় প্রায় দুই ঘণ্টা ফেরি আটকে রাখায় স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনকারী অ্যাডভোকেট মো. জহির উদ্দিন লিমন নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত ২৫ জুলাই রাতে সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম সচিব ও চাঁদপুরের সাবেক জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মণ্ডলের গাড়ির অপেক্ষায় মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি এক নম্বর ফেরিঘাটে প্রায় দুই ঘণ্টা 'কুমিল্লা ফেরি' বসিয়ে রাখা হয়। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা স্কুল ছাত্র তিতাস ঘোষকে পার করার জন্য বারবার অনুরোধ জানানো হলেও ফেরি ছাড়া হয়নি। ফলে অ্যাম্ব্যুলেন্সেই মৃত্যু হয় তিতাসের।

এ ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে তিতাসের পরিবারকে তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ৩১ জুলাই তিতাসের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে পদমর্যাদায় অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে তদন্ত করতে বলেন আদালত। তার আগেই ৩০ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রেজাউল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির প্রতিবেদন গত ৫ সেপ্টেম্বর দুপুরে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।

ওই প্রতিবেদনে দেরিতে ফেরি ছাড়ার জন্য দায়িত্বরত ফেরি ঘাটের তিন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়ী করে তদন্ত কমিটি। তদন্তে নির্দোষ বলা হয় যুগ্মসচিব আব্দুস সবুর মণ্ডলকে।

তবে ওই যুগ্মসচিবের জন্য দুই ঘণ্টা ফেরি দাঁড় করিয়ে রাখার সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। প্রতিবেদনে ভবিষ্যতে এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স/গাড়ি পারাপারের ব্যবস্থা গ্রহণসহ সাত দফা সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবেদনে যে তিনজনকে দায়ী করা হয়েছে তারা হলেন, ঘাট ম্যানেজার মো. সালাম হোসেন, প্রান্তিক সহকারী মো. খোকন মিয়া এবং উচ্চমান সহকারী ও গ্রুপ প্রধান ফিরোজ আলম। তাদের কাজে অবহেলা, ঘাট ব্যবস্থাপনায় অদক্ষতা ও বিআইডব্লিউটিএ পরিপত্র লঙ্ঘন করে বিলম্বে ফেরি ছাড়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। বুধবার এই প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

এ সম্পর্কিত আরও খবর