ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের জবানবন্দীর ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়ানোর মামলায় সোনাগাজী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আস শামছ জগলুল হোসেনের আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন তিনি। এরপর নিজের সমর্থনে আদালতে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি কেঁদে ফেলেন। যুক্তিতর্ক গ্রহণের জন্য আগামী ২০ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে।
মামলার বাদীসহ ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। গত ১৬ জুন বিকেলে হাইকোর্ট এলাকা থেকে তাকে আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশ। পরদিন তাকে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত ১৫ এপ্রিল সোনাগাজী থানার প্রত্যাহার করা ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ওইদিন সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস শামস জগলুল হোসেন বাদীর জবানবন্দী রেকর্ড করে ঘটনাটি তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন।
পিআইবি ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়ায় ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করে। গত ২৭ মে ট্রাইব্যুনাল প্রতিবেদন আমলে নিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমকে গ্রেফতারে পরোয়ানা জারি করেছিলেন।
জবানবন্দি দেওয়ার সময় বাদী সুমন বলেছিলেন, যৌন হয়রানির বিষয়ে নুসরাত থানায় অভিযোগ করতে গেলে আসামিসহ তাকে থানায় নেওয়া হয়। সেই সময় ওসি মোয়াজ্জেম তাকে আপত্তিকর জেরা করেন ও জেরার ভিডিও তার মোবাইল ফোনে ধারণ করেন। নুসরাতের মৃত্যুর পরদিন ১১ এপ্রিল বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় তিনি তা ছেড়ে দেন। থানার ভেতরে এমন ভিডিও ধারণ করা ও সোশ্যাল মিডিয়ার ছেড়ে দেওয়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরাধ।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে তার মা শিরীনা আক্তার মামলা করার পরদিন মাদ্রাসার সেই সময়ের অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই মামলা প্রত্যাহার না করায় ৬ এপ্রিল পরীক্ষার হল থেকে মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে আগুন দেয় বোরকা পরা কয়েকজন। অগ্নিদগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল মারা যান।