হলি আর্টিজানে হামলার পর রিগ্যান বলেছিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ’

, আইন-আদালত

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 01:42:53

হলি আর্টিজান রায়ের পর ‘আইএস’র টুপি মাথায় পরে আলোচিত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগ্যান। প্রশ্ন থেকে যায় হলি আর্টিজান হত্যাকাণ্ডে কীভাবে অভিযুক্ত তিনি!

মামলার নথি পর্যালোচনা, আসামিদের জবানবন্দি ও মামলার চার্জশিট দৃষ্টে দেখা যায়, বগুড়া জেলার সদর থানার জামিলনগর তালপুকুর মোড় এলাকার মৃত রেজাউল হক ও রোকেয়া আক্তারের ছেলে রিগ্যান।

২০১৪ সালে কলেজে পড়া অবস্থায় রিগ্যান আব্দুল্লাহ নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলেন। ফেসবুকে সাব্বির আহমেদ নামে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। বগুড়ার আজিজুল হক কলেজে তার সঙ্গে সাব্বিরের প্রথম সাক্ষাত হয়। সাব্বির তাকে আইএসে যোগ দেওয়ার কথা বলে। রিগ্যান রাজি হয়ে নব্য জেএমবিতে যোগদান করেন। তারপর সে ঢাকায় এসে মিরপুরের একটি বাসায় ওঠেন। ওই বাসায় আগে থেকেই আরও পাঁচজন জঙ্গি ছিল। তারা সেখানে ইসলাম ও ইসলামের শত্রু নিয়ে আলোচনা করতো।

সংগঠনের প্রয়োজনে রিগ্যান কখনও রাফিউল ইসলাম রাফি, রিপন, হাসান কিংবা অন্তর বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নাম ধারণ করেন। সে নব্য জেএমবি’র ট্রেনিং শাখার প্রশিক্ষকও ছিলেন।

হলি আর্টিজান হামলায় নিহত নব্য জেএমবির ইশতিহাদি (আত্মঘাতী) গ্রুপের ৫ সদস্যকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে মিরপুরের মধ্য পাইকপাড়ার একটি বাসায় ট্রেনিং দেন রিগ্যান। ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি ‘রিয়াদুস সালেহীন’ নামক গ্রন্থ থেকে জিহাদ অংশ পড়ে শোনাতেন এবং অপব্যাখ্যা দিয়ে আত্মঘাতী সদস্যদের মগজ ধোলাই করতেন।

বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ২০১৬ সালের জুন মাসে আত্মঘাতী সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেন রিগ্যান। অপারেশন করতে গিয়ে তোমরা যদি মারা যাও তবে তোমরা শহীদের মর্যাদা পাবে এবং নিশ্চিত বেহেশতে নসিব হবে। আত্মঘাতী ৫ সদস্যই রিগ্যানকে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে, তারা হাসতে হাসতে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করবে।

হলি আর্টিজানে হামলার পর অ্যাপসের মাধ্যমে মোবাইলে ছবি দেখে রিগ্যান বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, খুব ভাল কাজ হয়েছে। তার প্রশিক্ষণ মতো কাজ হওয়ায় তিনি তাদের জন্য দোয়া করেন।

হলি আর্টিজান হামলার পর বেশি দিন পালিয়ে থাকতে পারেননি রিগ্যান। পরে কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়িতে আত্মগোপন করেন তিনি। হলি আর্টিজান হামলার ২৭ দিনের মাথায় কল্যাণপুরের জাহাজ বিল্ডিংয়ে জঙ্গি বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। ওই অভিযানে ১১ জন নিহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেফতার হন রিগ্যান। তার নামে মিরপুর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে তাকে হলি আর্টিজান মামলায় সম্পৃক্ত করা হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর