রমিজ উদ্দিনের ২ শিক্ষার্থী মৃত্যুর মামলার রায় বিকেল ৩টায়

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-13 02:39:57

বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় জাবালে নূর বাসের মালিক ও চালকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টা নাগাদ ঘোষণা করবেন আদালত।

গত ১৪ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক গ্রহণ শেষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ রায়ের জন্য রোববার দিন ধার্য করেন।

মর্মান্তিক এ সড়ক দুর্ঘটনার এক বছর চার মাস পর রায় ঘোষিত হচ্ছে। রায় ঘোষণার আগে ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বার্তা২৪.কমকে বলেন, রোববার বিকেল ৩টা নাগাদ রায় ঘোষণা করবেন আদালত। আমরা মনে করি, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে, তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছি। তাই আইন অনুযায়ী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিমের বাবা মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলমও আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী টিএম আসাদুল সুমন। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই আসামিরা খালাস পাবেন বলে আমরা মনে করি।

মামলার আসামিরা হলেন-জাবালে নূর পরিবহনের সেই বাসের চালক মাসুম বিল্লাহ ও তার সহকারী এনায়েত হোসেন এবং বাসটির মালিক শাহাদাত হোসেন। ওই বাসটি যে বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়েছিল, সেই বাসের চালক জোবায়ের সুমন ও চালকের সহকারী কাজী আসাদ এবং বাসটির মালিক জাহাঙ্গীর আলম।

আসামিদের মধ্যে শাহদাত হোসেন, মাসুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আসামি সোহাগ আলী ও রিপন হোসেনের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর দণ্ডবিধির ৩০৪, ২৭৯, ৩২৩, ৩২৫ ও ৩৪ ধারায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ইন্সপেক্টর কাজী শরিফুল ইসলাম। চার্জশিটে ৪১ জনকে সাক্ষি করা হয়।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, আসামি মাছুম বিল্লাহ ও জোবায়ের সুমনের হালকা যান কার, জিপ ও মাইক্রোবাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলেও ৪১ সিটের বাস চালানোর ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এছাড়া জব্দকৃত তিনটি বাসের কোনোটিতেই কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না।

চার্জশিটে আরও উল্লেখ করা হয়, বাসের চালক ও তার সহকারী নিয়োগের এখতিয়ার বাস মালিকের। কিন্তু তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও বুদ্ধিমত্তা যাচাই ছাড়াই মালিক শাহদাত হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম তাদের নিয়োগ দেন।

২০১৮ সালের ২৯ জুলাই সকালে জাবালে নুরের দু’টি বাস আব্দুল্লাহপুর যাওয়ার সময় বেশি যাত্রী ও বেশি ভাড়া পাওয়ার আশায় পাল্লাপাল্লি ও রেশারেশি করে দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন চালকরা।

মাসুম বিল্লাহর বাসটিকে পেছনে ফেলে চালক জোবায়ের তার বাসটি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের ঢালের সামনে রাস্তার ওপর দাঁড় করিয়ে ডান দিকে রাস্তা ব্লক করে যাত্রী ওঠাতে থাকেন। ১১টা ৩০ মিনিটে মাসুম বিল্লাহ ডান দিক দিয়ে যেতে না পেরে বাম দিক দিয়ে যাওয়ার সময় ইচ্ছাকৃতভাবে বাসের অপেক্ষায় থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের ১৪/১৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর ওপর বাসটি তুলে দেন। যার কারণে ১৩/১৪ জন ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। যাদের মধ্যে ওই কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজীব মারা যায়।

এ ঘটনায় নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম গত ২৯ জুলাই ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর