দুর্নীতি খুনের চেয়েও মারাত্মক অপরাধ: হাইকোর্ট

, আইন-আদালত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-09-01 03:28:53

ব্যাংকের টাকা আত্মসাতের মামলায় জামিন আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্ট বলেছেন, যে কোনো মূল্যে ব্যাংকের আত্মসাৎ হওয়া টাকা উদ্ধার করতে হবে। প্রয়োজনে আসামিদের সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের টাকা আদায় করতে হবে। এদের কোনো ক্ষমা নেই।

আদালত বলেন, দুর্নীতি খুনের চেয়েও মারাত্মক অপরাধ। দুর্নীতি মামলার আসামিরা মাটির নিচে থাকলে সেখান থেকে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কারণ ব্যাংকের অর্থ জনগণের সম্পদ।

ভুয়া বিলের মাধ্যমে ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখা থেকে ২২ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ওই শাখার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলামের জামিন শুনানিতে এ মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আমিনুল ইসলামের জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে রায় দেন।

এর আগে গত ১৬ জুলাই তাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানাতে দুই সপ্তাহের রুল দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভুঁইয়া। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হোসাইন মোহাম্মদ ইসলাম।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, আদালত আমিনুল ইসলামকে জামিন দেননি। তার জামিন প্রশ্নে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছেন।

জানা গেছে, আসামিরা একে অন্যের যোগসাজশে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল নথি তৈরি করে ভুয়া রফতানি দেখিয়ে ২৬টি রফতানি বিল ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ধানমন্ডি শাখায় জমা দেন। পরে তারা ১৭টি বিলের বিপরীতে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯৮ হাজার ১২৬ টাকা উত্তোলন করেন। এর মধ্যে ৩টি বিলের মূল্যসহ ও চতুর্থ বিলের আংশিক মূল্যসহ পাঁচ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যাংকে ফেরত দেন। বাকি ১৪টি বিলের মূল্য ২১ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৪৭১ টাকা ব্যাংকে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।

পরে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন সাত জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মামলা দায়ের করেন। মামলাটি ঢাকার মুখ্য মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এ মামলার অপর ছয় আসামি হলেন— সাইমেক্স লেদার প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব (টি এস আইয়ুব), তার স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমান, ঢাকা ব্যাংকের এভিপি ও সিপিসি সুলতানা ফাহমিদা, মেসার্স এস অ্যান্ড এস এজেন্সির মালিক বিভূতি ভূষণ বালা, মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ আসাদুজ্জামান মিন্টু এবং মেসার্স সাদাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম।

এর মধ্যে গত ২১ মার্চ সাইমেক্স লেদারের চেয়ারম্যান টি এস আইয়ুব ও পরিচালক তানিয়া রহমানকে জামিন দেয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। জামিনের বিরুদ্ধে দুদক রিভিশন আবেদন করলে গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তাদের জামিন বাতিল করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।

হাইকোর্ট বলেছেন, এই দুইজনকে জামিন দেওয়া ঠিক হয়নি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর