ক্যানসার যেকোনো সময়ে আপনার শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোনো উপসর্গও শরীরে থাকে না। অর্থাৎ দুর্যোগ যেমন বলে-কয়ে আসে না, তেমনি ক্যানসারও।
তবে গবেষকদের দাবি, ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ১৩ বছর আগেই, তা বিশেষ একটি পরীক্ষায় বলে দেওয়া সম্ভব! আগাম এ পরীক্ষার সাফল্যের হার শতভাগ।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ও নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক এমনটাই দাবি করেছেন। সম্প্রতি তাদের গবেষণাপত্রটি অনলাইন জার্নাল ইবায়োমেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তারা প্রায় ১৩ বছর ধরে ৭৯২ জন মানুষের ওপর এ গবেষণা চালিয়েছেন। তাদের মধ্যে ১৩৫ জন পরবর্তীতে কোনো না কোনো ক্যানসারে আক্রান্ত হন।
প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিটি ক্রোমোজমের শেষপ্রান্তে টুপির মতো একটি অংশ রয়েছে। সেটি ডিএনএ-কে সুরক্ষিত রাখে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, শরীরে ক্যানসার বাসা বাঁধার অনেক আগে থেকেই ক্রোমোজমের সেই টুপি ক্রমশ জরাজীর্ণ চেহারা ধারণ করে। এ টুপিকে গবেষকরা বলছেন ‘টেলোমিয়ারস’।
ক্যানসার হওয়ার আগে থেকেই টেলোমিয়ার স্বাভাবিক অবস্থায় যতটা ক্ষুদ্র, তার থেকেও ক্ষুদ্রতর হতে থাকে। আক্রান্ত হওয়ার চার বছর আগে সেটি আর সংকুচিত হয় না। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রই গবেষকরা জিনের এ পরিবর্তনে মিল খুঁজে পেয়েছেন।
নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ড. লিফাং হউ বলেন, টেলোমিয়ারস ধরণটা বুঝতে পারলেই আমরা ক্যানসারের পূর্বধারণা করার পথে অনেকটা এগিয়ে যাব। এ দুটির মধ্যে খুব গভীর সম্পর্ক রয়েছে। সঠিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারলে ক্যানসারের আরও নানান ধরণ সম্পর্কে অনেক বিশদ ধারণা পাওয়া যাবে।
এদিকে, এ গবেষণা ক্যানসার চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে বলছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। তারা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রোগী যখন হাসপাতালে আসেন, তখন সারা শরীরে ক্যানসার ডালপালা বিস্তার করে ফেলেছে। তখন রোগীকে সুস্থ করে তুলতে যথেষ্ট বেগ পোহাতে হয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যানসার ধরা পড়লে এটি দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে সরিয়ে তোলা সম্ভব।