যাদের হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি আছে, তাদের বাসায় অবশ্যই সবসময় নাইট্রোগ্লিসারিন স্প্রে (glyceryl tri nitrate) রাখা উচিত। হার্ট এ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্র জিহ্বার নিচে দুই বার এই স্প্রে দেওয়ার পর আক্রান্ত রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
এতে হাসপাতালের যাত্রাপথে যেন রোগী ঝুঁকিমুক্ত থাকে, সেটি নিশ্চিত করা যায়। গ্লিসারাইল-ট্রাই-নাইট্রেট স্প্রে জিহ্বার নিচে দেওয়া মাত্র তা দেহের রক্তে চলে যায় এবং রক্তনালিকে প্রসারিত করে।
ফলে হৃদপিণ্ডের রক্ত সরবরাহ অক্ষুণ্ন থাকে এবং একই সাথে হৃদপিণ্ডের ওপর কাজের চাপ কমে যায়। এছাড়াও হৃদপিণ্ডের ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই কমে এসে এবং হার্ট এ্যাটাকের তীব্র ব্যাথা থেকেও রোগী সাময়িকভাবে মুক্তি পান।
যাদের হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি: (যাদের বাড়িতে এই ওষুধটি রাখা উচিত)
- যাদের পরিবারে হার্ট এ্যাটাকের ইতিহাস আছে
- ৪৫ বছরের বেশি বয়সের পুরুষ
- ৫৫ বছরের বেশি বয়সের নারী
- মেদবহুল শরীর
- শারীরিক পরিশ্রমহীন জীবন পদ্ধতি
- উচ্চরক্তচাপ
- ডায়াবেটিস রোগী
- তামাকজাত দ্রব্যে আসক্তি
- মদ ও অন্যান্য নেশাজাত দ্রব্যে আসক্তি
- অতিরিক্ত মানসিক চাপে থাকা ব্যাক্তি
- ইত্যাদি
হার্ট এ্যাটাকের লক্ষণ ও উপসর্গ: (যখন এই ওষুধটি ব্যবহার করতে হবে)
- বুকের ভেতর চাপ, অস্বস্তি, কেউ যেন বুকের ভেতর কিছু একটা চেপে ধরে রেখেছে, এরকম অনুভূতি
- বুকের ভেতর থেকে ছড়িয়ে পড়া ব্যাথা যেটা বাম হাত, চোয়াল, ঘাড় ইত্যাদি স্থান পর্যন্ত ছড়াতে পারে
- বমিভাব, বমি, শ্বাসকষ্ট
- ঘাম দিয়ে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া
- প্রচণ্ড ক্লান্তি
- মৃত্যুভয়
- হঠাৎ মাথা ঘুরে যাওয়া
এই লক্ষণগুলো থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তির হার্ট অ্যাটাক বা মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (myocardial infarction) হচ্ছে বলে ধারণা করা যায় এবং তখন নাইট্রোগ্লিসারিন ওষুধটি স্প্রে করে জিহ্বার নিচে দেওয়া যায়। তবে প্যানিক অ্যাটাক নামক মানসিক বৈকল্য বা অম্বল (এসিডিটি) থেকেও এরকম কাছাকাছি লক্ষণ ও উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই সতর্কতার সাথে এই ওষুধটি ব্যবহার করতে হবে।
ডা. মুহম্মদ মুহিদুল ইসলাম
সায়েন্টিফিক অফিসার
বিআইএইচএস জেনারেল হসপিটাল কোভিড-১৯ ল্যাব