নারীদের শরীর অনেক বেশি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। বয়সের বিভিন্ন ধাপে নানারকম পরিবর্তনের কারণে নারী শরীরে যত্নও অনেক বেশি প্রয়োজন। গতবছরের সমীক্ষা অনুযায়ী ১ বিলিয়নের বেশি কিশোরী এবং নারীরা রক্তস্বল্পতায় ভোগে। ভারতীয় চিকিৎসক চেতন সাভারিয়া পরামর্শ দেন নারীদের ভিটামিন জাতীয় উপাদান বেশি গ্রহণ করার। এসব উপাদান যেভাবে নারীদের শরীরে প্রভাব ফেলে-
‘ভিটামিন এ’: ভিটামিন এ বৃদ্ধি এবং বিকাশে সাহায্য় করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সেলুলার যোগাযোগের সাথেও ‘ভিটামিন এ’ সম্পর্কযুক্ত। নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন এটি। এছাড়াও শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের স্বাভাবিক কার্যকারিতাও রক্ষা করে।
‘ভিটামিন বি‘: বি ভিটামিন নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, ভিটামিন বি৩ কোষের বিকাশ ও কার্যকারিতা রক্ষা করে। পুষ্টির শক্তিতে রূপান্তর, ডিএনএ এবং ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের কোষ তৈরি ও মেরামতের জন্য কাজ করে ভিটামিন বি৩। ভিটামিন বি৬ রক্তাল্পতা প্রতিরোধ ও এর চিকিৎসা করে। গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাবের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ভিটামিন সেরোটোনিন উৎপাদন করে। যার ফলে মেনোপজকালীন নারীদের মধ্যে হতাশাজনক আচরণ কমে। ভিটামিন বি৯ নারীদের জন্য অত্যাবশ্যক ভিটামিন, বিশেষ করে গর্ভবতীদের জন্য। এই ভিটামিন নিউরাল টিউব ত্রুটি কমায় এবং শিশুর মেরুদণ্ড, মস্তিষ্কসহ অন্যান্য অঙ্গ রক্ষা করে। ভিটামিন বি ১২ লোহিত রক্ত কণিকা গঠন এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে। গর্ভধারণ এবং জন্মের সাথে সম্পর্কিত প্রধান প্রজনন সমস্যা প্রতিরোধ করতে সামর্থ্য় ভিটামিন বি১২।
‘ভিটামিন সি’: ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। স্তন ক্যান্সার এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায় এই ভিটামিন। তাই, ভিটামিন সি গর্ভবতী এবং নবকজাতকের মায়েদের সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
‘ভিটামিন ডি’: ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণের কাজ করে। গর্ভবতী নারীদের মধ্যে মাতৃ রক্তচাপ এবং অকাল প্রসবের ঝুঁকি কমায় এই ভিটামিন। এছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং প্রজনন ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে সহায়তা করে।
‘ভিটামিন ই’: উল্লেখযোগ্য একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন ই। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বুদ্ধি, ত্বক এবং চোখের স্বাস্থ্য বাড়ায় এই ভিটামিন। ভিটামিন ই প্রজনন স্বাস্থ্য, হৃদয়ের স্বাস্থ্য এবং হরমোনের ভারসাম্যের জন্যও প্রয়োজনীয়।
ভিটামিন নারীদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হরমোনজনিত, মাসিক এবং প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধ করতে ভিটামিনের প্রয়োজন। খাদ্য থেকে এসব সহজেই লাভ করা যায়। তবে অতিরিক্ত পুষ্টির চাহিদায় বাহ্যিকভাবেও গ্রহণ করতে পারেন।
তথ্যসূত্র: নিউজ১৮