তবে এই প্রক্রিয়াটি শিশুদের জন্য কতটা স্বাস্থ্যকর সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গিয়েছে। আর সেই বিষয়টি নিয়েই কাজ করেছে কানাডার একদল গবেষক।
তারা গবেষণা ও পরীক্ষার ফল থেকে তুলনা করে দেখেছেন, সরাসরি স্তন থেকে সন্তানকে পান করানো দুধের তুলনায় পাম্প করে সংগ্রহ করা দুধে, ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি তুলনামূলক বেশি।
গেলো সপ্তাহে ‘সেল হোষ্ট ও মাইক্রোব’ নামক বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল প্রকাশ করেছে কানাডার স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান 'কানাডিয়ান হেলদি ইনফ্যান্ট লঞ্জিটুডিনাল ডেভলপমেন্ট বার্থ কোহোর্থ স্টাডি'র (চাইল্ড) করা একটি গবেষণা। যেখানে উঠে এসেছে এমনই ব্যতিক্রম তথ্য।
পাম্পের মাধ্যমে সংগ্রহ করা মাতৃদুগ্ধে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ত্ব পেয়েছে কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানটি। রিসার্চের জন্য ৩৯৩ জন মায়ের উপর পরীক্ষা চালানো হয় কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠানটি থেকে।
মাতৃদুগ্ধের উপর গবেষণা ও এতে মাইক্রোবের উপস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য দুধের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয় মায়েদের কাছ থেকে। প্রথম দিকে মনে করা হতো যে, মাতৃদুগ্ধ একেবারেই বিশুদ্ধ। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সেই ভ্রান্ত ধারণাটি ভেঙেছে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফলে মাতৃদুগ্ধে ব্যাকটেরিয়া মিললেও কিছু মাতৃদুগ্ধে দুই ধরণের ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ত্ব পান তারা। যেসব মায়েরা তাদের সন্তানকে পাম্পের মাধ্যমে সংগ্রহ করা দুধ পান করিয়েছেন, সেই সব মায়েদের দুধেই মিলেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া।
সরাসরি মাতৃদুগ্ধ পান করানোর তুলনায় পাম্প ব্যবহার করে পান করানো দুধগুলোতে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ অনেক কম বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাটিতে। গবেষণাটিতে আরও বলা হয়েছে, উপকারী ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণে ঘাটতি থাকায় শিশুরা পাম্প করা মাতৃদুগ্ধ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি গুণাগুণ না পেতেও পারে।
গবেষণাটির সহকারী গবেষক ডাঃ মেঘান আজাদ বলেন, ‘ব্যাকটেরিয়াগুলো শনাক্ত করার পর কারণ অনুসন্ধান করতে বিভিন্ন দিকে নজর দেওয়া হয়। যেমন, তাদের বাচ্চা জন্ম দেওয়ার ধরণ, মাতৃদুগ্ধ পান পদ্ধতি, শারীরিক অবস্থা সহ সেই সব বিষয় যা এই ব্যাকটেরিয়ার জন্য দায়ি হতে পারে’।
‘সকল বিষয় পরীক্ষার পর আমাদের মনে হয়েছে মাতৃদুগ্ধ পানের পদ্ধতিই এই ব্যাকটেরিয়ার জন্য দায়ি, বলেন ডাঃ আজাদ।
তবে আজাদ আরো জানান, তারা মনে করছেন না পাম্প করা মাতৃদুগ্ধ পান করানো খারাপ বা এটি শিশুর জন্য দীর্ঘ মেয়াদী কোন ক্ষতির কারণ হতে পারে।