এর পাশাপাশি পড়ার সঙ্গী হিসেবে অনেকেই পেয়েছে ভিনদেশী সুপার হিরোদের গল্প। ভীষণ আকর্ষণীয় কল্প কাহিনীর টান টান উত্তেজনাময় গল্প পড়ে, সেই সকল গল্পের নায়ককে চিনেই এখনকার সময়ের বেশিরভাগ তরুণ প্রজন্মের বেড়ে ওঠা।
এই সকল গল্প খুব সূক্ষ্মভাবে হলেও ছোট শিশুদের মানসিক বিকাশের উপর প্রভাব ফেলে। তাদের চিন্তা-চেতনা, বুদ্ধিমত্তা, সঠিক-ভুলের পার্থক্য করতে পারার মতো মানসিক বিকাশের শুরুটা হয় ছেলেবেলায় পড়া বইগুলো থেকেই।
সেদিক থেকে ভাবলে বলতেই হয় বর্তমান প্রজন্ম অনেক বেশি ভাগ্যবান। কারণ এই সময়ের শিশুরা বেড়ে উঠবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর উপর তৈরি করা ‘মুজিব’ গ্রাফিক নভেল পড়ে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে বেড়ে ওঠা, রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া, দেশের নানান সময়ের রাজনৈতিক টানপোড়েনের সাক্ষী হওয়া ও তার কাজের প্রতিচ্ছবি গল্পচ্ছলে উঠে এসেছে এই বইগুলোতে।
বইমেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনের ডান দিকে এগিয়ে পুনরায় হাতের বামে মোড় নিলেই দেখা ‘মুজিব’ নামের স্টল। শুধুমাত্র এই গ্রাফিক নভেলগুলো দিয়েই সাজানো হয়েছে নজরকাড়া স্টলটি। শুধু তাই নয়, স্টলটির একপাশে অনেকখানি জায়গা জুড়ে মুজিবের ছবি দিয়ে সাজানো। আগ্রহী দর্শনার্থী ও ক্রেতারা স্টলে এসে বই কেনার পাশাপাশি ছবিও তুলছেন। এমনকি স্টলের বাইরে গ্রাফিক মুজিবের থ্রি-ডি প্রতিকৃতিও রাখা হয়েছে ছবি তোলার জন্য।
সিআরআই (সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন) এর প্রোগ্রাম ইয়াং বাংলা থেকে এই গ্রাফিক নভেলগুলো প্রকাশ করা হয়েছে। মোট ১২টি ধাপ হবে সম্পূর্ণ গ্রাফিক নভেলটির। তবে বইমেলাতে বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ৫টি গ্রাফিক নভেল।
ইয়াং বাংলার সিআরআই এসিস্টেন্ট প্রোগ্রাম অফিসার, হোসেন নাবিল এর সঙ্গে কথা হলে জানালেন, মুজিব গ্রাফিক নভেলের প্রতি সকল বয়সী ক্রেতাদের মাঝেই আগ্রহ রয়েছে।
বার্তা২৪ কে তিনি বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীটি পড়েছেন তারা নিজেদের সংগ্রহে রাখার জন্যে এই গ্রাফিক নভেলটি কিনে নিচ্ছেন। আবার অনেক বাবা-মা তার সন্তানদের জন্য কিনছেন। অনেকে আবার ছোট শিশুদের স্টলে এনে ছবি দেখিয়ে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে মুজিব এর সঙ্গে। এরপর বই কিনে দিচ্ছেন। সত্যি বলতে গ্রাফিক নভেলে বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরায় সবার মাঝেই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। এছাড়া বিগত বছরগুলোতে যারা মুজিব নভেলের আগের পর্বগুলো কিনেছেন, তারা এসে নতুন পর্বের খোঁজ করছেন। আরও পর্ব কবে আসবে জানতে চাচ্ছেন। খুব ভালো লাগে বিষয়টা’।
কথা বলার মাঝেই বেশ কয়েকজন ক্রেতা ভিড় জমালে হোসেন নাবিল ব্যস্ত হয়ে পড়েন ক্রেতাদের সামলাতে। এর মাঝে কথা হয় একজন ক্রেতার সঙ্গে। আফসানা আহমদ তার পাঁচ বছরের মেয়ে রাইসা আহমদকে নিয়ে বইমেলায় এসেছেন আজ তৃতীয়বারের মতো। ছোটদের বইয়ের পাশাপাশি তিনি মেয়ের জন্য মুজিব গ্রাফিক নভেলও কিনতে এসেছেন। জানালেন, এর আগেও তিনি মেয়ের জন্য এই নভেলের অন্য পর্বগুলো কিনেছেন। মুজিব গ্রাফিক নভেলের একটি বই হাতে ধরেই বললেন, ‘আমাদের বাচ্চাগুলো মুজিবকে পড়ে বড় হবে। বিষয়টা ভাবতেও ভালো লাগে’।
বইমেলার কিন্তু মোটে আর দুই দিন বাকি রয়েছে। নিজের জন্য তো বটেই, পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্যেও কিনে ফেলতে পারেন চমৎকার মুজিব গ্রাফিক নভেল। বাংলা ও ইংলিশ উভয় ভাষাতেই পাওয়া যাবে এই বইগুলো।
আরও পড়ুন: কল্পনার জীবন্ত বই পাওয়া যাচ্ছে বাস্তবেই!
আরও পড়ুন: আদিবাসী ম্রো ভাষায় প্রথম রূপকথার বই