‘চিত্রশিল্পী’ শব্দটা শুনলেই মাথায় কাজ করে রঙ, তুলি, কলম, পেন্সিল নিয়ে খেলা করা মানুষগুলোর কথা। যাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় ফুটে ওঠে এক একটি শিল্পকর্ম।
কিন্তু জানেন কি, রঙ-তুলি ছাড়া অন্যান্য মাধ্যমের সাহায্যেও আঁকা যেতে পারে ছবি। রঙ-তুলি ছাড়া সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাধ্যমের সাহায্যে ছবি তুলে বিশ্ব জুড়ে খ্যাতি পেয়েছেন গ্রীক-আমেরিকান একজন চিত্রশিল্পী।
মাইকেল পাপাদাকিস নামের এই গ্রীক-আমেরিকান তরুণ হতে চেয়েছিলেন একজন পর্যটক ও চিত্রশিল্পী। কিন্তু তিনি ব্যাকপ্যাক বেশী ভারী করতে চাইতেন না মোটেও। সে কারণে তিনি চিন্তা করতে শুরু করলেন ছবি আঁকার সরঞ্জাম না নিয়ে, কীভাবে কোথাও ঘুরতে গেলে প্রকৃতির সাহায্যে ছবি আঁকা যাবে। চিন্তা করতে করতে একসময় পেয়েও গেলেন অভিনব একটি পথ।
চিত্রশিল্পী মাইকেল ২০১২ সালে প্রথম আতঁশকাচ আর সূর্যরশ্মি ব্যবহার করে ছবি আঁকলেন কাঠের তক্তার উপর। সূর্যরশ্মি দিয়ে আতঁশকাচের সাহায্যে কাঠ পুড়িয়ে ফুটিয়ে তুলতে লাগলেন অসাধারণ সব ছবি।
সূর্যরশ্মির তাপে কাঠ পুড়িয়ে ছবি আঁকার এই নতুন মাধ্যমটির পোশাকি নাম ‘হেলিওগ্রাফি' (Heliography)।
২০১২ সালে শুরু করার পর ২০১৬ সালে মাইকেল প্রতিষ্ঠা করেন ‘সানস্ক্রাইবস’ নামের নিজের প্রতিষ্ঠান। নিজের ওয়েবসাইটে মাইকেল বলেছেন, ‘২০১৩ সালে আমি কলোরাডোতে চলে যাই এবং সূর্যালোকের বিভিন্ন রূপ নিয়ে পরীক্ষা শুরু করি। আমি নিজেই অবাক হয়ে আবিষ্কার করেছি যে, সূর্যালোক (লেন্সের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া সূর্যালোক) এবং প্রতিফলিত সূর্যালোক (আয়নায় প্রতিফলিত সূর্যালোক) এই দুইটি একেবারে আলাদা। এই সব পরীক্ষার পরেই আমি বুঝতে শুরু করি যে, একই উৎস থেকে এলেও সূর্যালোকের একাধিক ধরণ হতে পারে'।
তিনি আরো বলেন, ‘সত্যি বলতে, আগের থেকে এখন এই শিল্পের ধরণটি আমার নিজের কাছেও বেশ স্পষ্ট হয়েছে। এটি একটি বিশেষ প্রক্রিয়া ও খুবই শ্রমসাধ্য কাজ। এই কাজের জন্য প্রচুর ধৈর্য ও আস্থা প্রয়োজন'।
ইতোমধ্যে মাইকেল তার শিল্পকর্ম নিয়ে লাইভ শো’র আয়োজন করেছেন। এমনকি হেলিওগ্রাফি শিখতে চাইলে, মাইকেল বেশ আনন্দ নিয়েই তাকে ছবি আঁকার এই মাধ্যমটি শেখাচ্ছেন।
আরো পড়ুন: পাখির চোখে ভিন্নমাত্রায় দৃষ্টিনন্দন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আরো পড়ুন: কাগজের ভাস্কর্যে মুগ্ধতা আনেন ‘পেপার ইঞ্জিনিয়ার’