কেকের মাঝে ফুটিয়ে তোলা ফুল, গাড়ি, হাতব্যাগ, কিংবা চিঠি ও চুড়ির গল্প নতুন কিছু নয়। কেক তৈরির কারিগরদের মনোমুগ্ধকর উপস্থাপন দেখে বিস্মিত ও আনন্দিত হতে হয়েছে বহুবার।
এবারে সত্যিকার অর্থেই দেশের জন্য আনন্দের সংবাদ এনেছেন তাসনুতা আলম। চলতি বছরের ৪-৬ এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ‘কেক ইন্টারন্যাশনাল লন্ডন’ প্রতিযোগিতা।
যেখানে বিশ্বের মোট ৮০টি ভিন্ন দেশ থেকে ৭০০ জন প্রতিযোগীদের সাথে লড়াই করে, ৩১ জন বিচারকের চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষন শেষে দুইটি (একটি যৌথভাবে) স্বর্ণ, দুইটি রৌপ্য ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জিতেছেন বাংলাদেশের মেয়ে কেক-আর্টিস্ট তাসনুতা আলম।
মোট চারটি ভিন্ন বিভাগের পাঁচটি কেক নিয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। যার মাঝে চারটি একক ও একটি যৌথ বিভাগ ছিল। তাসনুতার অংশ নেওয়া বিভাগগুলো ছিলো- কাপকেকস, স্মল এক্সকিউটিভ, ডেকোরেটিভ প্লাক ও পিন আপ গার্লস কোলাবরেশন। যেখানে কাপকেকস বিভাগে ৯৪ শতাংশ নাম্বার পেয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন গুণী এই শিল্পী।
এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো কেক ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন তাসনুতা। প্রথম দু’বারে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করলেও, এবারই প্রথম স্বর্ণপদক লাভ করেন তিনি। স্বর্ণপদক প্রাপ্তির অনুভূতি জানাতে গিয়ে বার্তা২৪.কমকে তাসনুতা বলেন, ‘প্রথমবার স্বর্ণ জেতা একটা অদ্ভুত অনুভূতি। প্রথমে তো বিশ্বাসই হচ্ছিলো না আমার। আমি ভেবেছি হয়তো রৌপ্যপদক পাবো। দুইটা স্বর্ণপদক পাওয়ার পর আনন্দে আমি কান্নায় ভেঙে পড়ি’।
তাসনুতা পেশাগতভাবে কেক তৈরি শুরু করেন ছয় বছর আগে থেকে। তবে একদম প্রথম কেক বানানোর হাতেখড়ি হয়েছে তার মা কাওসার আলম এর কাছ থেকে। তাসনুতা জানান, তিনি জনপ্রিয় কেক আর্টিষ্ট ডন বাটলার, পল ব্রাডফোর্ড, রবার্ট হায়নেস এর কাছ থেকে কেক তৈরি শিখেছেন। শুধু তাই নয়, ২০১৭ সালে তিনি কেক ডেকোরেটিং এর উপরে ‘মাষ্টার্স অফ কেক ডেকোরেটিং’ কোর্স করেছেন PME লন্ডন ইউকে থেকে।
২০০৮ সালে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ থেকে অ্যাকাউন্টিং এ ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হওয়া তাসনুতা বর্তমানে স্বামী আহমেদ সাদিক ও সন্তান আদিয়ান সাদিককে নিয়ে প্রবাসে বাস করছেন।
কেক তৈরি করাই তাসনুতার জীবনের প্যাশন। এই কাজটি থেকে নিজেকে দূরে রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে ও দেশের বাইরে সব জায়গাতেই দেশকে নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করা শুরু হয়ে গেছে। দ্রুতই সেটা সম্পর্কে সবাইকে জানানো হবে’।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ ‘ফুড রেঞ্জার’
আরও পড়ুন: হাসপাতালে অলস সময় কাটবে বই পড়ে