দিনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের চারপাশের সবকিছুই আবর্তিত হয় প্রযুক্তির সাথে। মোবাইলের স্ক্রিন থেকে ল্যাপটপ, ডেস্কটপ প্রতিদিনের আবশ্যিক অনুষঙ্গ হলো এই যন্ত্রগুলো। প্রযুক্তির ব্যবহার যেমনভাবে আমাদের বহু কাজ সহজ করে তুলেছে, তেমনভাবেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর।
প্রতিদিন নির্দিষ্ট ও ধরাবাঁধা সময় ডেস্কটপে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের বসার ভঙ্গির বিষয়ে মোটেও সচেতন থাকি না আমরা। যার দরুন দেখা দেয় বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা।
কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে ঘাড় ঝুঁকিয়ে ও ডান হাত মাউসে রেখে ক্রল করার ভঙ্গিতে শরীর খুবই বেকায়দায় ভাঁজ হয়ে থাকে। এমনভাবে বসার ভঙ্গিতে পিঠ, ঘাড় ও হাতের মাঝে কোন সামঞ্জস্যতা থাকে না। মানবদেহের গঠন এমনভাবে বসার মতো করে তৈরি করা হয় ও এমন ব্যতিক্রম বসার ভঙ্গিতে হাড়ের গঠনে ও স্থায়িত্বে সমস্যা তৈরি হয়। ফলে ঘনঘন ঘাড় ও পিঠে ব্যথার উপদ্রব তৈরি হয়।
মানুষের মাথার স্বাভাবিক ওজন ১০-১২ পাউন্ড। কাঁধের উপর সঠিক ভারসম্যে মাথা থাকায় এত ভরে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় না। তবে মাথা সামনের দিকে যত বেশি ঝোঁকানো হয়, মাথার ভর তত বেশি বৃদ্ধি পায়। এভাবে সর্বোচ্চ ৬০ পাউন্ড পর্যন্ত মাথার ভর বৃদ্ধি পেতে পারে। যা পুরো মাথার জন্যে, ঘাড়, কাঁধ ও মেরুদণ্ডের ওপর নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে।
স্মার্ট মোবাইল ও ট্যাবলেটের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে হাতের তর্জনি, বৃদ্ধাঙ্গুলি ও টেনডন (হাড়ের মাঝে সমন্বয় তৈরিকারি টিস্যু) সমূহে প্রদাহ তৈরি হয়। এতে করে হাতের আঙ্গুলে, হাড়ের জোড়াতে ব্যথাভাব দেখা দেয়। কলমের সাহায্যে লেখার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডেস্কটপ কিংবা মোবাইলে- যেকোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা হয় কুঁজো হয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে। এতে করে মেরুদণ্ডের অ্যালাইনমেন্ট তথা শ্রেণিবিন্যাসে সমস্যা দেখা দেয়। যা থেকে নার্ভাস সিস্টেমের সমস্যা দেখা দেওয়া সহ শারীরিক কোঅর্ডিনেশন ও কন্ট্রোলজনিত সমস্যা দেখা দিতে থাকে।
দিনের বেশিরভাগ সময় কুঁজো হয়ে কিংবা ঝুঁকে কাজ করার ফলে শারীরিক ভঙ্গিতে কিংবা বডি পশচারে পরিবর্তন চলে আসে। এতে দেখা যায় বসার সময় কিংবা হাঁটার সময় কাঁধ সামনের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। যা দেখতে খুবই বাজে লাগে।
আরও পড়ুন: মেটাবলিজম কমছে যেসকল অভ্যাসে
আরও পড়ুন: পরিচিত বদভ্যাসেই দেখা দেয় কিডনির সমস্যা