সংস্কৃতি ভেদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সকালের নাস্তা হয়ে থাকে বিভিন্ন রকম। চলুন জেনে নেওয়া যাক উন্নত, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল কয়েকটি দেশের মানুষ কী খেয়ে দিন শুরু করেন।
সুইজারল্যান্ড
অন্যতম উন্নত এই দেশে ব্রেকফাস্টে সাধারণত বিরচুরেমুসেলি (birchermüesli) নামক ঐতিহ্যবাহী একটি খাবার খাওয়া হয়। এটি মূলত ফলমূল ও বাদামের সাথে জইয়ের (oats) মিশ্রন। এটি ঘন দইয়ের সাথে পরিবেশন করা হয়।
তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে এদেশের মানুষ ব্রেকফাস্ট না করে বেশ বেলা করে সকাল ও দুপুরের খাবার একবারে খায়। এদিন রোস্তেয়ি (আলুর প্যানকেক), পনির এবং টেবিলের মাঝখানে থাকে জোফ (zopf)। এটি ডিম-পাউরুটি বিশেষ একটি খাবার, যা অনেকটাই রুটির মত। এই খাবার মধু, মাখন ও জ্যামের সাথে খাওয়া হয়।
ইথিওপিয়া
আফ্রিকার এই দেশে সাধারণত জাও খেয়ে দিন শুরু করা হয়। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে ও ভাবে ভুট্টদানা খাওয়া হয়। এর মধ্যে জেনফো (genfo) অন্যতম।
এটি হচ্ছে সেদ্ধ আটার ঘন মিশ্রন, যা পরে দলা পাকানো হয়। এটির মাঝখানে খানিকটা জায়গা রাখা হয়, যার মধ্যে মাখন ও বিভিন্ন মসলা দেওয়া হয়। মাঝে মাঝে এটির চারপাশে দই রেখে পরিবেশন করা হয়।
জাপান
দিনের অন্যান্য খাবরের চেয়ে জাপানি ব্রেকফাস্টের রকম ও রস কমে গেছে। বেশিরভাগ সকালেই তারা ঐতিহ্যবাহী খাবরের কিছু খেয়ে দিন শুরু করেন। বিভিন্ন মাছ যেমন স্যালমন, ম্যাকরল, মিসো স্যুপ, লবণ মিশ্রিত সবজি এবং ভাত রয়েছে এই তালিকায়। তবে মিষ্টি দিয়ে পাতলা করে ডিম ভাজিও বেশ জনপ্রিয়।
অস্ট্রেলিয়া
বিভিন্ন শস্য, আভাকাডো, সুস্বাদু টোস্ট এবং দেশটির ক্যাফে কালচারের নানা আইটেম থাকে অস্ট্রেলীয় ব্রেকফাস্টে। স্থানীয়ভাবে ব্রেকি (brekkie) নামে পরিচিত তাদের সকালের নাস্তা স্বর্গীয় বলে মনে হতে পারে!
এদেশের দিন শুরু হয় তরতাজা শস্য এবং পুষ্টি সমন্বয় করে তৈরি খাবার দিয়ে। গম জাতীয় শস্য, ডিম ও মসলাযুক্ত সবজি এবং ভাতও খাওয়া হয়। এগুলো ফল দিয়ে পরিবেশিত হয়। সাথে দৈনিক দুধ পান ভোলেন না দেশটির নাগরিকরা।
আর্জেন্টিনা
মেডিয়ালুনাস (medialunas), পেস্ট্রি, বোম্বাস (bombas) ও বোলাস ডি ফ্রেইলি (bolas de fraille) এদেশের জনপ্রিয় ব্রেকফাস্ট আইটেম। ডোনাট ও ঘন চকলেটও কম প্রচলিত না। অনেকে পেস্ট্রি ক্রিম ও ভ্যানিলার কাস্টারও খেয়ে থাকেন। তবে সব খাবারের সাথে এক কাপ কফি থাকবেই।
যুক্তরাষ্ট্র
বাটারমিল্ক মার্কিন মুল্লুকের বহুল প্রচলিত ব্রেকফাস্ট। সাথে থাকে মচমচে করে ভাজা শুকরের মাংস। কিছুটা লবণাক্ত ও সুমিষ্ট এই নাস্তা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে খুব প্রিয়। এটিকে আরও সুস্বাদু করে তোলার জন্য অনেক সময় চকলেট, মাখন ইত্যাদি দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
রাশিয়া
সামুদ্রিক মাছের ডিম বা ক্যাভিয়ার হলো পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই দেশটির প্রধান ব্রেকফাস্ট। আর সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লাল বা কালো রঙের ক্যাভিয়ার নানাভাবে ওলাদি প্যানকেক (oladyi pancakes) আকারে খাওয়া হয়।
স্থানীয় সুমিষ্ট রাই রুটি (rye bread) দিয়েও খাওয়া হয় ক্যাভিয়ার। অনেক সময় মাখন দিয়ে মাখিয়েও খাওয়া হয় এটি। তবে প্রতিদিনের নাস্তার সাথে ব্ল্যাক টি অবশ্যই থাকে রাশিয়ানদের ব্রেকফাস্টে।
সূত্র: সিএনএন
আরও পড়ুন: দশ দেশের দশ ‘ঐতিহ্যবাহী’ খাবার
আরও পড়ুন: পৃথিবী বিখ্যাত পাঁচ ব্যয়বহুল কফি!