নিয়মিত গান শোনা অনেকের প্রতিদিনের রুটিনের একটি অংশ। সকালে ঘুম থেকে উঠে, ঘুমানোর আগে, বাইরে যাত্রাকালীন সময়ে, কাজ কিংবা পড়াশুনার পাশাপাশি গান শুনতে ভালোই লাগে।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ বা অবসাদে সংগীতের মাধ্যমে মনকে প্রফুল্ল করার মতো থেরাপি ইদানিং অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।
বর্তমানে কাউন্সেলিংয়ের সাথে মিউজিক থেরাপির উপরেও গুরুত্ব দিচ্ছে মনোবিদরা। শিশু থেকে পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতেও কার্যকর মিউজিক।
সংগীত শোনার মধ্য দিয়ে মানুষ বিভিন্ন ধরনের আবেগ প্রকাশ করেন- হাসি, কান্না, দুঃখ, শান্তি ইত্যাদি ভঙ্গি ব্যক্তির চেহারায় ফুটে ওঠে। যারা সংগীত শোনেন তাদের কাছে মনে হয়, এটিই তাদের ভালো থাকার, সুখে থাকার চাবিকাঠি।
কিন্তু কেনো এমন অনুভূতি কাজ করে? তা কি আমরা জানি? জেনে নিন মিউজিক থেরাপির কাজ।
১. গবেষকদের মতে, মানব মস্তিষ্ক কাজ করে ছন্দের তালে। যে কারণে বাদ্যযন্ত্রের সুর মস্তিকের উপরে প্রভাব ফেলে। মস্তিষ্কের কোষ গানের ছন্দে স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে, বিশেষ করে গানের কথার অর্থের সাথে মিল পেলে বা সেই গানে কোনো বিশেষ কিছু ঘটে থাকলে। ভাবনা-চিন্তার সাথে মেলবন্ধন তৈরি করতেও গানের তাল-ছন্দ সাহায্য করে ।
২. গান বা মিউজিক স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখে। সিন্যাপসিস যত শক্তিশালী হবে স্মৃতিশক্তি ততই বাড়বে। মানসিক চাপ থাকলে সেটি মস্তিষ্ক কোষের উপর প্রভাব ফেলে। ফলে যেকোনো চাপযুক্ত কাজ সিন্যাপসিসকে দুর্বল করে দেয়। এটি গুড ফিল হরমোন ডোপামিন ও সেরোটনিনের মাত্রা হ্রাস করে। ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। মিউজিকের প্রভাবে গুড ফিল হরমোনের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যা স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে এবং দীর্ঘ মেয়াদী করতে সাহায্য করে।
৩. মস্তিষ্কের নিউরন সিন্যাপসিসের মাধ্যমে যুক্ত থাকে। গান শোনার মধ্যে মস্তিষ্কে আলফা ও থিটা তরঙ্গ উৎপন্ন হয়, যা স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। অন্যদিকে থিটা তরঙ্গ মস্তিষ্ককে শান্ত করে এবং মনঃসংযোগে সাহায্য করে।
৪. কর্টিসলকে বলা হয়ে থাকে স্ট্রেস হরমোন। এই হরমোন স্মৃতিশক্তি দৃঢ় করতে বাধা দেয় ও মানসিক চাপ তৈরি করে। মস্তিষ্কে কর্টিসল বিভিন্ন ধরণের কার্যকারিতায় বাধা প্রদান করে। সেক্ষেত্রে মিউজিক এই কর্টিসলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। সংগীত শোনার ফলে মাথা হালকা হয় ও মানসিক চাপ কমে।
আরও পড়ুন: কোলাজেন সমৃদ্ধ পিনাট বাটারে ত্বকের তারুণ্য
আরও পড়ুন: সানস্ক্রিন ব্যবহারে কি ‘ভিটামিন-ডি’ বাধাপ্রাপ্ত হয়?