দীর্ঘসময় বসে কাজ: ঝুঁকিপূর্ণ হার্ট, ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা

, লাইফস্টাইল

লাইফস্টাইল ডেস্ক | 2023-08-28 20:50:23

 

নিজের অজান্তেই দীর্ঘসময় নিরবচ্ছিন্ন বসে কাজ করে বড় রোগের ঝুঁকিতে পড়ছেন কর্মজীবীরা। বেশিরভাগ মানুষের কাছে কর্পোরেট চাকুরি যে আরামের এটা বলাই বাহুল্য। তবে আদতেই কতটা আরামের এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উপযুক্ত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

অর্থপেডিক চিকিৎসকদের মতে, ব্যাক পেইনের চিকিৎসার জন্য আগত রোগীদের অর্ধেকই কর্পোরেট সেক্টরের কর্মী এবং একাধারে আট ঘন্টার বেশি সময় বসে কাজ করেন।

দীর্ঘসময় বা টানা বসে কাজ করার ফলে ব্যাক পেইন হয় এটাই ধারণা সবার। কিন্তু এর ভয়াবহ দিকগুলো সাধারণ মানুষের কাছে অস্পষ্ট।

সবচেয়ে উৎকন্ঠার বিষয় হলো শুধুমাত্র বসে কাজ করার ফলে মানবদেহে একাধারে অনেক রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। হাড়ের সমস্যার পাশাপাশি বেড়ে যায় অন্যান্য রোগের ঝুঁকিও।

গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ:

হৃদরোগ: দীর্ঘসময় বসে থাকার জন্য হাইব্লাড প্রেশার এবং রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ডায়াবেটিস: অগ্নাশয় একধরণের ইনসুলিন তৈরি করে শরীরের পেশী কোষে প্রেরণ করে। শারীরিক মুভমেন্ট কম হওয়ার কারণে তার মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

ক্যান্সার: দীর্ঘসময় বসার কাজ করলে কোলন, ব্রেস্ট, পেটে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

পেশী ডিজেনারেশন ঝুঁকি: মাংসপেশীকে শক্তিশালী করা এবং এর ফ্লেক্সিবিলিটি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ সময় বসে থাকার কারণে মেরুদণ্ডের নিচের দিকের হাড় বেঁকে যাওয়া, হিপস ও পেশী শক্ত হওয়ার মতো জটিলতাও দেখা দেয়।

মানসিক চাপ বৃদ্ধি: যখন বডির মুভমেন্ট কমে যায় তখন হৃদস্পন্দন তার স্বাভাবিকতা হারায়। ফলে রক্তে এবং মস্তিস্কে সঠিক ভাবে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। যা মানসিক চাপের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে।

ব্যাক পেইন: দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার কারণে হাড় ক্ষয়, মেরুদণ্ড শক্ত, গলা এবং ঘাড়ে ব্যথাসহ মেরুদণ্ডের গঠন ভারসাম্যহীন হয়ে পরে।  

পায়ের সমস্যা: একনাগারে পা ঝুলিয়ে বসে থাকার ফলে পায়ের পাতা পর্যন্ত রক্ত চলাচল বাঁধাপ্রাপ্ত হয় ফলে পায়ে পানি জমে। এছাড়া জয়েন্টেও ব্যথা হয়। 

পরিত্রাণের উপায়: 

জটিল এসব রোগের ঝুঁকি এড়াতে সহজ কিছু ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়ে থাকেন ফিজিওথেরাপিস্ট। 

১. সকালে এবং বিকেলে নিয়ম করে কিছু যোগ ব্যায়াম করা।

২. রক্তসঞ্চালনের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে প্রতি একঘন্টা পরপর পাঁচ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করা।

৩. সঠিক উপায়ে অর্থাৎ মেরুদণ্ড সোজা করে বসলে ব্যাক পেইন এড়ানো সম্ভব। পা ক্রস না করে সোজা হয়ে বসার অভ্যাস করা।

৪. বসে বসেই গলা এবং ঘাড়ের খুব সহজ কিছু ব্যায়াম করা।

৫. লিফট এড়িয়ে যথা সম্ভব সিড়ি ব্যবহার করা। 

প্রশ্ন যখন আপনার স্বাস্থ্যের, তাই সু-স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে আপনাকেই দীর্ঘমেয়াদী চিন্তা করতে হবে। নিয়ম মেনে চললে তবেই নিশ্চিত করা যাবে ভবিষ্যৎ সুস্থতা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর