কিন্তু আপেল থাকে সকল ফলের সামনে। ‘প্রতিদিন একটি আপেল দূরে রাখবে ডাক্তারের কাছ থেকে’ চিরায়ত এই প্রবাদটি আপেলের বহুমুখী উপকারিতার জন্যেই বলা হয়।
কিন্তু কেন সকালের নাশতাতেই আপেল খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে? চমৎকার উপকারী ফলটি দিনের যেকোন সময়েই তো খাওয়া যায়। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র জানাচ্ছে, সকাল ব্যতীত দিনের অন্য সময়ে আপেল খাওয়া হলে ফলটির রোগ প্রতিরোধকারী উপকারিতা সম্পূর্ণ পাওয়া সম্ভব হয় না। প্রতিটি খাদ্য উপাদান গ্রহণের ধরণ ও গ্রহণের সময়ের উপর তার উপকারিতার তারতম্য ঘটে। সেদিক থেকে বলতেই হয়, সকালের নাশতায় রুটি বা ওটস খাওয়ার পর আপেল খেলে সবচেয়ে বেশি উপকারিতা পাওয়া যাবে।
শুধু আয়ুর্বেদ শাস্ত্র নয়, গবেষণার তথ্যও একই কথা বলছে এক্ষেত্রে। সকালে আপেল খাওয়ার ফলে তার উপকারিতাটুকু সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাবে। কারণ আপেলে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ আঁশ ও পেকটিন। যাদের খাদ্য পরিপাকজনিত সমস্যা আছে তাদের ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করে এই দুইটি উপাদান। সকালে আপেল খাওয়ার ফলে বাওয়েল মুভমেন্টের অন্যান্য যেকোন ফলের চাইতে আপেল কার্যকরিভাবে কাজ করে।
আপেলে থাকা পেকটিন পাকস্থলিস্থ ল্যাকটিক অ্যাসিড ও কোলনে বৃদ্ধি পাওয়া উপকারী ব্যাকটেরিয়াকে সুরক্ষিত রাখে। ফলে খাদ্য পরিপাক হয় খুব ভালোভাবে এবং পাকস্থলীজনিত সমস্যা কমে যায় অনেকটা। এছাড়া পেকটিনের আরেকটি চমৎকার ইতিবাচক গুণ হলো, এটি শরীরের টক্সিন উপাদান ও ক্যানসার তৈরিকারী ক্ষতিকর উপাদানকে শরীর থেকে বের করে দিতে সাহায্য করে।
কিন্তু সকাল ছাড়া দিনের অন্য সময়ে তথা বিকাল বা সন্ধ্যায় আপেল খেলে কি উপকারিতা পাওয়া যাবে না? অবশ্যই যাবে। কিন্তু জেনে রাখা প্রয়োজন আপেল হলো ‘প্রো-ডায়জেস্টিভ ফ্রুট’, যা খুব দ্রুত খাবারকে হজম হতে সাহায্য করে। এ কারণে বিকাল-সন্ধ্যা বা রাতে আপেল খাওয়ার ফলে ঘনঘন ক্ষুধাভাব, গ্যাসের সমস্যা বা পেটে ব্যথাভাবও দেখা দিতে পারে।
এছাড়া আপেলে থাকা অর্গানিক অ্যাসিড পাকস্থলিস্থ অ্যাসিডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি, যা কিছু ক্ষেত্রে বাওয়েল মুভমেন্টের উপরে বাড়তি চাপ তৈরি করতে পারে। সকালে আপেল খাওয়ার পর সারাদিনে কয়েকবার খাবার খাওয়া হয়, যা এই অ্যাসিডের মাত্রাকে সাম্যাবস্থায় নিয়ে আসে। এ কারণেও সকালে হালকা নাশতার পর উপকারী এই ফলটি খাওয়া হলে উপকারিতা পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ।
আরও পড়ুন: