আমাদের হাতের কাছেই উপকারী উপাদান ছড়িয়ে থাকে। কিন্তু সঠিক তথ্য অজানা থাকার ফলে তার ব্যবহার ও উপকারিতা সম্পর্কে অন্ধকারেই রয়ে যেতে হয়। এমনই দুইটি উপকারী উপাদান হলো মধু ও দারচিনি গুঁড়া। শীতকালীন পুরো সময় জুড়ে গরম পানিতে মধু ও দারচিনি গুঁড়া মিশিয়ে পান করলে ঠাণ্ডার সমস্যাকে যেমন দূরে রাখা সম্ভব হবে, তেমনিভাবে পাওয়া যাবে বেশ কিছু রোগের হাত থেকে মুক্তিও।
দারচিনি ও মধুতে থাকা একাধিক উপাকারি উপাদান মুখ গহ্বরে উপস্থিত নানাবিধ ক্ষতিকর ও দুর্গন্ধ তৈরিকারী জীবাণু ধ্বংস করতে কাজ করে। এতে করে মুখে গন্ধ দূর হওয়ার সাথে দাঁত ও মাড়ি সম্পর্কিত নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে আসে। তবে মুখের ভেতরের এই উপকার পেতে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন নিয়ম করে এক গ্লাস গরম পানিতে আধা চা চামচ দারচিনি গুঁড়া ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করতে হবে। পান করার সময় পানির মিশ্রণটি মুখের ভেতরে কিছুক্ষণ রেখে দিয়ে এরপর পান করতে হবে।
ক্ষতিকর কোলেস্টেরল বা এলডিএল এর মাত্রা কমানোর মধ্যে দিয়ে হৃদস্বাস্থ্যের উন্নতিতে দারচিনি এবং মধু বিশেষ ভূমিকা পালন করে। শুধু তাই নয়, মধুতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্রের ভেতরের প্রদাহ কমাতে কার্যকর। ফলে কমে যায় হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা।
বেশ কিছু গবেষণা থেকে দেখা গেছে, সকালে নিয়মিত গরম পানিতে মধু এবং দারচিনি মিশিয়ে পান করলে মেদ কমার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ফলে ওজন কমতে বেশি সময় লাগে না। এছাড়া দারচিনির গুঁড়া আলাদাভাবে তলপেট ও কোমরের বাড়তি মেদ কমাতে কাজ করে।
মধুতে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট শরীর থেকে টক্সিক উপাদানদ বের করে ক্যানসার কোষের জন্ম প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে দারচিনিতে থাকা অ্যান্টি-টিউমার উপাদান শরীরে টিউমার হতে প্রতিরোধ করে। এতে করে সাধারণ অবস্থায় ক্যানসার দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকটা।
বেশ কিছু গবেষণার ফল থেকে দেখা গেছে, নিয়মিত দারচিনি এবং মধু গ্রহণে পেটে জমে থাকা গ্যাস বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি দেখা দেয়। এতে করে স্বাভাবিকভাবেই বদহজম এবং বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমে যায়।
ব্লাডারে সংক্রমণ ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি থেকে দেখা দেয় ব্লাডার ইনফেকশনের মতো সমস্যাটি। এই ইনফেকশনটি পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও থাকে। এই শারীরিক সমস্যাটি কমাতে ১ চা চামচ দারচিনির গুঁড়া ও আধা চা চামচ মধু এক কাপ গরম পানিতে মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। মধুর অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ধর্ম এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে। ফলে সংক্রমণের প্রকেপ দ্রুত কমে আসবে।