শীতকাল মানেই কিছুক্ষণ পরপর চা-কফি পান করা। প্রতিবার চা-কফি পান করার সময় কয়েক চামচ চিনিও খাওয়া হয়। এতে করে প্রতিদিন বেশ অনেকখানি চিনি খাওয়া হয়ে যায়। চা ও কফি পানে কোন সমস্যা নেই। কিন্ত সমস্যা রয়েছে চা-কফিতে থাকা চিনিতে।
মেডিক্যাল হাইপোথিসিস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে- চিনি শুধু ওজন কিংবা পেটের মেদই নয়, ডেকে আনবে বিষণ্ণতাকেও। ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাসের গবেষকেরা চিনি গ্রহণের পরে মানুষের শারীরবৃত্তীয় ও মনস্তাত্ত্বিক পরিবর্তনের তথ্য পর্যবেক্ষন করে এমনটা জানিয়েছে।
শীতকালীন সময় তো বটেই, এর সাথে ছুটির সময়ে খাওয়া বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি খাবারও একই রকম ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে। এমনকি অতিরিক্ত চিনি গ্রহণে দেখা দেয় অ্যালকোহলের মতো নেতিবাচক প্রভাব।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যানসাসের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও এ গবেষণার সহ-গবেশক স্টিফেন ইলারদি বলেন, ‘অ্যালকোহল হল বিশুদ্ধ ক্যালোরি, এনার্জি, পুষ্টিবিহীন ও অত্যন্ত ক্ষতিকর পানীয়। যার সাথে চিনির অনেক মিল রয়েছে। আমরা এতোদিন কাজ করে বুঝতে পেরেছি বিষণ্ণতা কীভাবে দেখা দেয়। এই সমস্যাটি কমানোর জন্য সবার উচিৎ পুষ্টিসম্পন্ন খাবার খাওয়া, যা মস্তিষ্কের প্রয়োজন এবং চিনির মতো টক্সিন উপাদান এড়িয়ে যাওয়া।’
বিষদভাবে বুঝিয়ে ইলারদি বলেন, ‘আমরা যখন মিষ্টি কিছু খাই সেটা অনেকটা ড্রাগের মতো কাজ করে। মিষ্টি কিছু খাওয়ার ফলে তাৎক্ষণিকভাবে মন ভালো হয় কিন্তু বেশি পরিমাণ খাওয়া হলে তার জন্য মন ও মুড ভালো থেকে খারাপ হওয়ার দিকে চলে যায়। এছাড়া চিনি প্রদাহ তৈরি করে ও ওজন বাড়াতেও অবদান রাখে।’
ইলারদি আরও জানান, বিষণ্ণতায় ভোগা মানুষের মাঝে বড় একটি অংশের মাঝে দেখা গেছে তাদের প্রদাহের সমস্যা রয়েছে। চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহণে প্রদাহ তৈরি হয়। এক্ষেত্রে ইলারদি বলেন, ‘ইনফ্ল্যামেটরি হরমোন সরাসরিভাবে মস্তিষ্ককে বিষণ্ণতায় ফেলে দিতে পারে।’
সাধারণভাবে সাদা বিষ হিসেবে পরিচিত চিনিকে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস থেকে যতটা দূরে রাখা সম্ভব হবে, শারীরিক ও মানসিকভাবে ততই সুস্থ থাকা যাবে।