কোভিড-১৯ সংক্রমণ বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্তকরণ পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সামাজিক সংক্রমণ সম্প্রতি আরও বেড়েছে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক ও দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বেশ কিছু সুপারিশ প্রণয়ন করেছে। কার্যকরী প্রতিষেধক আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত ভাইরাস সংক্রমণরোধে এ নির্দেশগুলোই মেনে চলতে হবে।
বাজার কিংবা গ্রোসারি স্টোরে গিয়ে আমরা করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারি। এটা কেবলমাত্র সামাজিক দূরত্ব বা সোশ্যাল ডিসট্যান্সিংয়ের কারণে হতে পারে, তা কিন্তু নয়। আপনার কাক্সিক্ষত খাদ্যসামগ্রী হয়তো এর আগে অনেকেই স্পর্শ করেছে। তাই বলে নিত্যদিনের খাবারের চাহিদা পূরণে আমরা বাজার কিংবা গ্রোসারি স্টোরে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে পারি না। তবে, এক্ষেত্রে রয়েছে সমাধান। প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার সংরক্ষণ আমাদের বাজার কিংবা গ্রোসারি স্টোরে গিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে অনেকখানি মুক্ত রাখবে। এক্ষেত্রে, আমরা রেফ্রিজারেটরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী অনেকদিন সংরক্ষণ করতে পারি।
এক্ষেত্রে কিছু সংরক্ষণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে:
টাটকা শাক-সবজি, ফলমূল, মাংস কিংবা মাছ কিনে সেগুলোকে ফ্রিজিং করা যেতে পারে। প্যাকেটজাতকৃত কিংবা বাসায় তৈরি করা ব্রেড কিংবা মাফিনও অনেকদিনের জন্য রেফ্রিজারেটরে রাখতে পারবেন।
শাক-সবজিগুলো কেটে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে এক মিনিটের জন্য গরম পানিতে সেদ্ধ করুন। তারপর, এনজাইম নিষ্ক্রিয় করতে এগুলোকে তাৎক্ষণিকভাবে ঠান্ডা পানিতে রাখুন। পরবর্তী ধাপে, বাতাস প্রবেশ করতে পারে না এমন প্লাস্টিক ফ্রিজার ব্যাগের ভেতর এগুলোকে ঢুকিয়ে, ব্যাগের ওপর নামসহ তারিখ লিখে রাখতে পারেন। টমেটো ও শসার মতো সবজিগুলো ভালো করে ফ্রিজ হয় না, তবে ব্রকোলি, মটরশুঁটি বেশ ভালোভাবে ফ্রিজিং করা হয়।
আপেল জাতীয় ফল দীর্ঘদিন রেফ্রিজারেটরে রেখে খাওয়া যায়। এছাড়া, কলা ও আনারস বেশ ভালো ফ্রিজিং হয়। এই ফলগুলো কেটে তা ফ্রিজার ব্যাগের মধ্যে রেখে রেফ্রিজারেটরে রাখতে হয়। মাছ ও মাংস বাতাস নিরোধক ফ্রিজার ব্যাগে ঢুকিয়ে রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায়।
রেফ্রিজারেটরে দীর্ঘসময় খাবার সংরক্ষণের জন্য আপনার রেফ্রিজারেটরের একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। এই তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ফারহেনাইটের (৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) নিচে হতে পারে। এবং ফ্রিজারের তাপমাত্রা হওয়া উচিৎ শূন্য ডিগ্রি ফারহেনাইট (-১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। যা খাদ্যসামগ্রীতে উপকারী ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি নিশ্চিত করবে এবং দ্রুত পচনশীল খাদ্যসামগ্রীকে দীর্ঘক্ষণ সংরক্ষণে সাহায্য করবে।
রেফ্রিজারেটরের ভেতরের দিক অর্থাৎ পেছনের অংশ সবসময় দরজার অংশের চেয়ে বেশি পরিমাণে ঠান্ডা হয়। তাই, দুগ্ধজাতীয় খাবার রেফ্রিজারেটরের পেছনের অংশে এবং মশলা, আচার, চাটনি, মেয়োনেজ প্রভৃতি রেফ্রিজারেটরের দরজার পাশের অংশে রাখলে এসব খাদ্যসামগ্রী দীর্ঘসময় সংরক্ষণ করা যাবে।
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের রেফ্রিজারেটর রয়েছে। তবে, এর মধ্যে সিঙ্গারের রেফ্রিজারেটরগুলো বেশ টেকসই, স্থায়ী ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও খুব সহজেই ব্যবহার উপযোগী। বর্তমান পরিস্থিতিতে অনলাইনে সিঙ্গার রেফ্রিজারেটর কিনলেই ক্রেতারা পাচ্ছেন বিধি মোতাবেক ফ্রি হোম ডেলিভারি সুবিধা। আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে, সিঙ্গারের রেফ্রিজারেটরে পাওয়া যাচ্ছে ৮ শতাংশ ফ্ল্যাট ডিসকাউন্ট।
এই সঙ্কটকালীন সময়ে পণ্য ও খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি চিন্তা করে অনেকেই নিজেদের চাহিদার তুলনায় অধিক পরিমাণে পণ্য সামগ্রী ক্রয়ের চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে, অনেক সময় বিপত্তি ঘটে। প্রথমত, অন্যরা প্রয়োজনীয় এসব খাদ্যসামগ্রী ক্রয় থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, ক্রয়কৃত খাদ্যসামগ্রী পচে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই, এ সময় আমরা শাক-সবজি ও ফলমূলের মতো খাদ্যসামগ্রী প্রয়োজনমতো কিনে তা সহজেই রেফ্রিজারেটরে রেখে দিতে পারি। ফলে, দীর্ঘদিন এসব খাদ্যের সজীবতা ও পুষ্টিগুণ অটুট থাকবে, যা করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে ও আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করবে।