পিকআপই এখন যাত্রী পরিবহন!

, জাতীয়

মাহিদুল মাহিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাভার (ঢাকা) | 2023-08-24 22:33:04

চলমান দুর্যোগ করোনাভাইরাস ও বন্যার মাঝেই মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব ঈদুল আযহা উদযাপন হয়েছে অনেকটা প্রানহীনভাবেই। তবে এর মাঝেও ঝুঁকি নিয়ে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরেছে অনেকেই। আবার কর্মস্থলে যোগ দিতে বাসে নয়, পিকআপেই ফিরছে কর্মমুখী মানুষ।

ঈদুল আযহা উপলক্ষে সরকারি ছুটি ৩ দিন করা হলেও বিভিন্ন শিল্প কারখানা শুক্রবার অফিস খোলা রেখে ছুটি সংযুক্ত করেছিল। যার বেশিরভাগই ৮ আগস্টের আগেই খুলে দেওয়ার কথা রয়েছে। কর্মস্থলে যোগ দিতে একদিন আগেই জীবিকার তাগিদে পরিবার পরিজন রেখে আবার ফিরছেন তারা। তবে খরচ কমাতে বাস নয়, পিকআপই বেঁছে নিচ্ছেন এসব মানুষ।

শুক্রবার (৭ আগস্ট) সাভারের বাইপাইল, নবীনগর, সাভার ও হেমায়েতপুর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে দেখা যায়, একের পর এক মানুষ বোঝাই পিকআপ ঢুকছে ঢাকায়। পিকআপে আসা যাত্রীর বেশির ভাগই শ্রমিক। খরচ বাঁচাতেই ঝুঁকি নিয়ে এই পরিবহনে করে আসা।

নাটোর থেকে পিকআপে করে কর্মস্থল সাভারে যাচ্ছেন জুয়েল, তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাসে কোনো স্বাস্থ্যবিধি নেই। সব সিটেই যাত্রী নিচ্ছেন তারা। শুধু শুধু ভাড়া দিগুণেরও বেশি। এতো বেশি টাকা দিয়ে অযথা বাসে আসবো কেন। সামান্য ঝুঁকি থাকলেও পিকআপে আসলে টাকা অনেক বেঁচে যায়। তাই পিকআপে আসলাম।

খরচ কমাতে বাস নয়, পিকআপই বেঁছে নিচ্ছেন এসব মানুষ

রংপুরের মিঠাপুর থেকে পিকআপে করে আসা মারুফ বলেন, আমরা গরিব মানুষ। বেতন পেয়েছিলাম ৯ হাজার টাকা। বাসা-ভাড়া ও দোকান বিল ৪ হাজার টাকা দিয়ে ৫ হাজার নিয়ে বাড়ি রওয়ানা করেছিলাম। যাওয়ার সময় বাস ভাড়া চেয়েছে ১ হাজার ৭০০ টাকা। যদি যাতায়াতে ৩ হাজার টাকার ওপরে চলে যায় তাহলে বাড়িতে বাবার হাতে দেবো কি। বাধ্য হয়েই পিকআপে যাতায়াত করতে হয়েছে।

পিকআপের চালক বাচ্চু বলেন, আমরা করোনার শুরু থেকে এক প্রকার বসেছিলাম। কোনো আয় ছিল না। ঈদের সুযোগ কাজে না লাগালে খাবো কি। আমাদের পরিবারেরও তো ঈদ আছে। যাত্রী কম নিতে চাইলেও অনেকে জোর করে ওঠে। খালি গাড়ি নিয়ে রওয়ানা হলেও গাড়ি ভরে যায়। যাত্রীরা তো এখন পিকআপই বেছে নিচ্ছে। আমরা কি করবো।

দূরপাল্লার বাসের চালক আশরাফুল বলেন, আমাদের অর্ধেক যাত্রী এবার ঈদে পিকআপে করেই বাড়ি গেছে। আমরা যাত্রী পেয়েছি এক দিন। পরের দিনই ফাঁকা গাড়ি নিয়ে ট্রিপ দিয়েছি। মানুষ স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা না করেই পিকআপ বেছে নিচ্ছে। বাড়ি থেকে ফিরছেনও তারা পিকআপে।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নে নেতা কে এম মিন্টু বলেন, এবার ঈদে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে অনেকেই গ্রামে যাননি। যারা গিয়েছেন তাদের অর্ধেকই পিকআপে করে গিয়েছেন। বাসের ভাড়া বেশি হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে পিকআপে যাতায়াত করেছেন শ্রমিকরা। মূলত স্বল্প আয়ের মানুষদের আয়ের চেয়ে ঈদে পরিবহন ব্যয় অনেক বেশি। তবে ঈদে বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা করা হলে এসব স্বল্প আয়ের মানুষদের যাতায়াতে ঝুঁকি কমবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর