কক্সবাজার: বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। এখানে প্রকাশ্যে চলে ‘অস্ত্রের’ ঝনঝনানি। বর্তমানে এ দ্বীপের নামের পাশে যুক্ত হয়েছে জলদস্যু আর ডাকাতদের নামও। দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকা পাহাড় ঘেরা হওয়ায় ডাকাত ও অস্ত্র কারাখানায় ভরে গেছে। আর এসব কারখানা থেকে অস্ত্র যায় জলদস্যু বা ডাকাতদের কাছে। প্রতিনিয়ত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চলে গোলাগুলি।
পুলিশ ও র্যাব-৭ সূত্রে জানা যায়, গত ২ মাসে র্যাব-পুলিশের অভিযানে প্রায় ৫৫টি অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ গুলি ও অস্ত্র তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এসব ঘটনায় প্রায় ৭ আসামিকে আটক ও মামলা হয়েছে ৫টি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নে গত ২৮ আগস্ট মাত্র ২ হাজার টাকার বিরোধে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৭ জন গুলিবিদ্ধ হয়। ২৬ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার হোয়ানকের পাহাড়ি এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়ে সন্ত্রাসীরা। এ সময় প্রায় ৪০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে পুলিশ। গোলাগুলির এক পর্যায়ে ৩টি দেশীয় তৈরি অস্ত্র ও ২০ রাউন্ড গুলিসহ মো. সরওয়ার আলম (৩২) নামে এক সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়। এছাড়া গত ১৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় যুবলীগ নেতা জিয়াবুল হককে।
বিশেষ করে আধিপত্য বিস্তার ও মৎস্যঘের কেন্দ্রিক গোলাগুলির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রকাশ্যে গোলাগুলি ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আতঙ্কে আছে মহেশখালীবাসী।
মহেশখালীর বিশিষ্টজনরা বলছেন, আধিপত্য বিস্তার ও মৎস্যঘের কেন্দ্রিক গোলাগুলিতে সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে বেশি। অনেকে গুলিবিদ্ধও হচ্ছে। যা আগামীতে আরও বড় ধরনের ঘটনার জন্ম দিতে পারে। এ নিয়ে শঙ্কিত মহেশখালীর মানুষ। দ্রুত প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব অস্ত্র কারাখানা ও সন্ত্রাসীদের দমনে যৌথ অভিযানের দাবি জানান তারা।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ বার্তা২৪.কমকে জানান, অস্ত্র কারাখানার বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩৫টির মতো অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান বার্তা২৪.কমকে জানান, র্যাব-৭ গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কয়েকটি অস্ত্র কারাখানার সন্ধ্যান পাওয়া গেছে। একটিতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২০টি অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ অস্ত্র তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। এসব সন্ত্রাসীদের আটকে র্যাবের সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দারা কাজ করছে।