সিডিএ’র ভুলে গচ্চা যাচ্ছে ১০ কোটি টাকা!

চট্টগ্রাম, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-28 08:06:40


  • বাকলিয়া এক্সেস রোডের এলাইনমেন্টে সেই ১০ তলা ভবন


সিডিএ’র প্ল্যানিং বিভাগ ভুল করে এলাইনমেন্টের জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছিল ২০১০ সালে। সেই অনুমোদনের প্রেক্ষিতে নির্মিত হয়েছে ১০ তলা ভবন। বাকলিয়া এক্সেস রোডের এলাইনমেন্টের জায়গায় অনুমোদন দেয়া সেই ভবনের পেছনে এখন সিডিএকে গচ্চা দিতে হতে পারে প্রায় ১০ কোটি টাকা। দীর্ঘ দুই বছর ধরে সিদ্ধান্তহীনতায় থাকা ভবনটি নিয়ে সম্প্রতি ক্ষতিপূরণ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে ক্ষতিপূরণের অঙ্কটি এখনো নির্ধারণ হয়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ১০ কোটি টাকার বেশি আসবে না।

এই রোড নির্মাণে সিডিএ’র পক্ষ থেকে বার বার বলে আসা হয়েছে এলাইনমেন্ট অনুযায়ী ভবন নির্মিত হবে। এলাইনমেন্টের মধ্যে ১০ তলা একটি ভবন রয়েছে তা ২০১৬ সালে শনাক্ত হওয়ার পরও এলাইনমেন্ট পরিবর্তন করা হয়নি। এবিষয়ে প্রকল্পটির পরিচালক ও সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাঈনুদ্দিন বলে আসছেন, এলাইনমেন্ট অনুযায়ী রাস্তা নির্মাণ করতে যদি ভবন ভাঙতে হয় তাহলে ভবন ভাঙা হবে।

কিন্তু এই ভবনটি সিডিএ থেকে অনুমোদন নিয়ে গড়ে উঠায় তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পার হয়ে গেছে দুই বছরের বেশি। সম্প্রতি ভবন ভাঙার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার পর ভবনটির ক্ষতিপূরণ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। ভবনের ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি হয়ে যাওয়ায় ভবন ও ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দেয় হবে।

ক্ষতিপূরণে কি পরিমাণ টাকা আসতে পারে জানতে সিডিএ’র একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্ষতিপূরণের টাকা নির্ধারণ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর। এজন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরের কাছে চিঠি দেয়া হবে। গণপূর্ত অধিদপ্তরের একটি টিম ও সিডিএ’র টিম যৌথভাবে সার্ভে করে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নির্ধারণ করবে। ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের পদ্ধতি প্রসঙ্গে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলীরা জানান, মূলত ভবনের বয়স, ভবনের নির্মাণ উপকরণের উপর ভিত্তি করে একটি ভবনকে সাধারণ, সুপার ও সুপিরিয়র এই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়। তিনটি ভাগে প্রতি বর্গফুট অনুযায়ী দর রয়েছে, সেই দরের সঙ্গে ভবন ভাঙা ও তা অপসারণের খরচ যুক্ত করে ক্ষতিপূরণের টাকা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।

অপর এক সূত্রে জানা যায়, সিডিএ’র প্ল্যানিং বিভাগ, ইমারত নির্মাণ কমিটি ও বিশেষ কমিটির সবাইকে পাশ কাটিয়ে রাস্তার এলাইনমেন্টের জায়গায় ১০ তলা ভবনের অনুমোদনের ভুলটি কেউ শনাক্ত করতে পারেনি। আর এসব কমিটির সদস্যদের ভুলের কারণে এখন প্রায় এখন সিডিএকে গচ্চা দিতে হবে ১০ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, নগরীর সিরাজুদ্দৌল্লা রোডে চন্দনপুরা মসজিদের বিপরীত পার্শ্বে আয়েশা খাতুন লেইন (প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সারের বাড়ির পাশ দিয়ে) দিয়ে বাকলিয়া থানা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রোডটি ৬০ ফুট চওড়া হবে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে একনেক সভায় সড়কটি নির্মাণের জন্য ২০৫ কোটি ৪৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে তা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সড়কটি নির্মিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ দ্রুত চট্টগ্রাম শহরের সাথে যাতায়াত করতে পারবে। তাদেরকে আর বহদ্দারহাট ঘুরে নগরীতে প্রবেশ করতে হবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর