৫১ দিন পর মৃত কিশোরী জীবিত উদ্ধার!

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নারায়ণগঞ্জ | 2023-08-24 02:10:12

নারায়ণগঞ্জ শহরের দেওভোগ এলাকায় ধর্ষণের পর হত্যার ৫১ দিন পর জীবিত ফিরে এসেছে কিশোরী জিসা মনি (১৫)। অথচ তাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় জড়িত তিন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় দিয়েছিলেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি। তবে এ ঘটনাটি প্রথমে পুলিশ স্বীকার না করলেও পরে গণমাধ্যমের কাছে সত্যতা স্বীকার করে।

গত ৪ জুলাই থেকে নিখোঁজ ছিল জিসা মনি (১৫) নামে ওই কিশোরী। দীর্ঘ ১ মাস খোঁজাখুজির পর মেয়েকে না পেয়ে ৬ আগস্ট সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা করেন বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন। মামলার তদন্তভার পান সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন।

এ মামলায় গ্রেফতার করা হয় বন্দর উপজেলার খলিলনগর এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২২), পশ্চিমপাড়া এলাকার সামসুদ্দিনের ছেলে রকিব (১৯) ও নৌকার মাঝি খলিলকে (৩৬)।

মামলায় জিসা মনির বাবা জাহাঙ্গীর উল্লেখ করেন, আব্দুল্লাহ তার মেয়েকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিত। তাকে বিরক্ত করতে নিষেধ করা হলে সে আমার মেয়েকে অপহরণের হুমকি দেয়। ৪ জুলাই সন্ধ্যায় আব্দুল্লাহ জিসা মনিকে ফোন দিয়ে তার কাছে যেতে বলে। এরপর থেকেই আমার মেয়ের কোন খোঁজ নেই।

৯ আগস্ট মামলার আসামিরা নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন হোসেন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবিরের পৃথক আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় বলে নিশ্চিত করে সদর মডেল থানা পুলিশ।

আসামিদের দেওয়া জবানবন্দিতে জানা যায় ৪ জুলাই বিকেলে রকিবের ইজিবাইকে ঘোরাঘুরি শেষে ওই কিশোরীকে শহরের পাঁচ নম্বর ঘাট এলাকায় নিয়ে যান আব্দুল্লাহ। সন্ধ্যায় খলিল মাঝির নৌকা ভাড়া করে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে। পরে আব্দুল্লাহ ওই নৌকাতেই জিসা মনিকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণে অংশ নেন নৌকার মাঝি খলিলও।

এ সময় বাসায় বিষয়টি জানানোর কথা বললে জিসা মনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আব্দুল্লাহ ও খলিল। এরপর মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। তবে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খোঁজ করেও মেয়েটির মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি।

২৩ আগস্ট (রোববার) দুপুর আড়াইটার সময় বন্দরের নবীগঞ্জ রেললাইন এলাকার একটি মোবাইল ফোনের দোকান থেকে জিসা তার মা রেখা আক্তারকে ফোন করে জানায় সে বেঁচে আছে এবং সুস্থ আছে। তবে কিছু টাকার প্রয়োজন। এমন কথায় টাকা পাঠিয়ে রেললাইন এলাকায় ছুটে যান জিসার মা-বাবা। পরে খবর পেয়ে পুলিশ জিসা মনিকে সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে সে পুলিশি হেফাজতে আছে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। গ্রেফতার তিন আসামি কেন এই রকম জবানবন্দি দিয়েছে সেটা বলতে পারছি না। আমরা তাদের আবার রিমান্ডে নেব। রিমান্ডে তাদের পুনরায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর