প্রাথমিক ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুদ্ধ সংসদীয় কমিটি। বঙ্গবন্ধু কর্নারের বই কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সংসদীয় কমিটিতে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির সদস্যরা বলেছেন বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার। প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন যেটা হয়েছে ‘অপ্রত্যাশিত’।
বুধবার (২৬ আগস্ট) জাতীয় সংসদ ভবনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কার্যসূচির বাইরে সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে কথা বলেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। আসলেই দুর্নীতি হয়েছে কি না, হলে কারা কারা জড়িত সেসব অনুসন্ধানে একটি সাব কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি ইতিমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পুস্তক ক্রয়ের অনিয়মের বিষয়ে তদন্ত করার জন্য সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম বাবুকে আহ্বায়ক করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি সংসদীয় সাব-কমিটি গঠন করে। কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ হলেন আলী আজম, বেগম শিরীন আখতার ও মো. মোশারফ হোসেন।
সংসদীয় কমিটির সদস্য ও সাব কমিটির সদস্য মো. মোশারফ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি বলেছি একটা ছাপা বই কিনতে কেন এত টাকা লাগবে? আর শুধু এখানেই না এর আগে কলাগাছ কিনতে দুর্নীতি হয়েছে, পর্দা কেলেঙ্কারি। এরকম একের পর এক বড় বড় প্রকল্পের টাকা নয়-ছয় হচ্ছে। এসব বিষয়ে নিয়ে প্রশ্ন তোলাতে কমিটির সভাপতি একটি সাব কমিটি করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি এটাও বলে দিয়েছি শুধু সাব কমিটি গঠন করলেই হবে না। কমিটির প্রতিবেদন যদি আলোর মুখ না দেখে তাহলে কমিটি করে কি লাভ? আমরা সকল তথ্য উপাত্তা খুঁজে দেখব কারা কার এর সঙ্গে জড়িত। আমরা খুব শিগগিরই এর একটি রিপোর্ট কমিটিতে জমা দেব। অবশ্য প্রতিমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেছেন আপনারা যেটা করবেন আমি সাথে আছি। তবে যেটা হয়েছে সেটা অপ্রত্যাশিত।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের প্রতিবেদকের কাছেও আমরা সহায়তা চাইতে পারি। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সকল নথিপত্র দেখে আমরা একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন জমা দেব।
সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে বৈঠকের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালো রাত্রিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও তার পরিবারের সদস্যসহ অন্যান্য যারা শহীদ হয়েছেন এবং করোনা মহামারিতে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
এছাড়া বৈঠকে করোনা মহামারিকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে যে সেবা বা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
বৈঠকে ই-প্রাইমারি, স্কুল মনিটরিং ও ব্রান্ডিং এর বিষয়ে বছরভিত্তিক একটি পরিসংখ্যান মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। করোনাকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সাথে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে পড়াশুনার খোঁজখবর নেওয়া এবং পড়াশোনা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়ে আরও সচেষ্ট থাকার জন্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, আলী আজম, মো. নজরুল ইসলাম বাবু, বেগম শিরীন আখতার, বেগম ফেরদৌসী ইসলাম ও মো. মোশারফ হোসেন অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন, অতিরিক্ত সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতি. মহাপরিচালক, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতাবৃন্দ এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থতি ছিলেন।