গাংনী হাসপাতালের আরএমও’র দায়িত্ব পালন করেন বাবুর্চি!

, জাতীয়

মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2023-08-22 01:28:37

মেহেরপুর গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের ভর্তিকৃত রোগীদের খাবারের মান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। পোলট্রি মুরগির মাংস, সিলভার কার্প জাতীয় মাছ সহ নিম্নমানের খাবার দেয়া হয় বলে অভিযোগ রোগীদের। এ বিষয়ে রোগীসহ সংশ্লিষ্টদের ক্ষোভ বাড়লেও দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সাদিয়া সুলতানা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপরে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রান্না ঘরে কথা হয় বাবুর্চি লাইলি খাতুনের সঙ্গে। আবাসিক মেডিকেল অফিসারের ভূমিকার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আরএমও সশরীরে রান্না ঘরে এসে খাবারের পরিমাপ ও মান দেখেন না। ঠিকাদারের লোকজন যখন রান্না ঘরে খাবার দিয়ে যান, তখন আরএমওকে মোবাইলে তা জানানো হয়। ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা যে বাজার করে দিয়ে যান তা দেখে আমি আরএমওকে যা বলি তিনি সেভাবে লিখে নেন।’

অথচ নিয়মানুযায়ী প্রতিদিনের খাবার তৈরির জন্য ঠিকাদারের লোকজন যা সরবরাহ করবে তার পরিমাপ ও মান পরীক্ষা করার দায়িত্ব কর্তৃপক্ষের। অথচ বাবুর্চির মুখের কথায় চলছেন আরএমও। তাই ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে নিম্নমানের খাবার ও পরিমাপে কম দেয়া হচ্ছে বলে গুঞ্জন চলছে হাসপাতাল পাড়ায়।

রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন পোলট্রি মুরগির মাংস বা সিলভার কার্প জাতীয় মাছসহ নিম্নমানের খাবার দেয়া হয়। যা অনেকে খেতে পারেন না। এসব খাবারের পুষ্টিমান নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন।

গাংনী আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, বর্তমান সরকার সেবাখাতকে জনকল্যাণমূলক করতে নানা কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। হাসপাতালে যারা ভর্তি থাকেন তাদের বেশিরভাগ গরিব রোগী। তাদের চিকিৎসার পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। খাবারের মান নিয়ে যেহেতু রোগীদের অভিযোগ রয়েছে, তাই সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।

এদিকে খাবার ব্যবস্থাপনার নীতিমালা ও প্রতিদিনকার বরাদ্দপত্র দেখতে চাইলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, ‘হাসপাতালের প্রধান সহকারী আসাদুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার ব্যবস্থাপনার নীতিমালা ও প্রতিদিনকার বরাদ্দপত্র সংগ্রহ করুন।’

তবে সাংবাদিকরা প্রধান সহকারীর কাছে গেলেও তিনি অফিসের নানা নিয়মের কথা বলে কাগজপত্র দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে খাবার নিয়ে ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ আরও গভীর হচ্ছে।

খাবারের অভিযোগের বিষয়টি জানতে চাইলে আরএমও ডা. সাদিয়া সুলতানা বলেন, ‘তিনবেলা রান্না ঘরে গিয়ে খাবারের পরিমাপ ও মান পরীক্ষা করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তবে খাবারের মান পরীক্ষা করা হয়।’

গাংনী হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাহিদুজ্জামান খোকন জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর