রাজস্ব বাড়াতে চলমান চিরুনি অভিযানের দ্বিতীয় দিন বুধবারে (২ সেপ্টেম্বর) ৮৩৪টি বাড়ি, স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের টিম। রাজস্ব আদায় বাড়াতে বিশেষ চিরুনি অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএনসিসির অঞ্চল-৫ এবং অঞ্চল-২ এর ওয়ার্ডগুলোর বাড়ি, স্থাপনা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হচ্ছে।
যেসকল বাড়ি স্থাপনা হোল্ডিং ট্যাক্স দেয় না বা যে বাড়ি একতলা থাকতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করার পর ভবনের বর্ধিত তলার ট্যাক্স নির্ধারণ হয়নি সেগুলো ট্যাক্সের আওতায় আনতে এই অভিযান। বুধবার পরিদর্শন করা বাড়িগুলোর মধ্যে ১১১টি হোল্ডিংয়ে ইতিপূর্বে ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি অর্থাৎ ট্যাক্সের বাহিরে ছিল। এছাড়া ১৭০টি হোল্ডিং ইতিপূর্বে অ্যাসেসমেন্ট করা হলেও পরবর্তীতে হোল্ডিংগুলো সম্প্রসারণ করা হয়েছে। ইতিপূর্বে ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট করা হয়নি এবং সম্প্রসারিত এ সকল হোল্ডিংকে ট্যাক্সের আওতায় আনা হবে। দুই দিনে মোট ৩৯৬টি বাড়ি ও স্থাপনা ট্যাক্সের আওতায় আসবে।
চিরুনি অভিযান চলাকালে মিরপুরে (অঞ্চল-২) ৫৩৬টি বাড়ি/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ১০৬টি হোল্ডিং ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট বিহীন এবং ১১৬টি হোল্ডিং সম্প্রসারিত পাওয়া যায়। এছাড়া কারওয়ান বাজার অঞ্চলে (অঞ্চল-৫) ২৯৮টি বাড়ি/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ৫টি হোল্ডিং ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট বিহীন এবং ৫৪টি হোল্ডিং সম্প্রসারিত পাওয়া যায়।
গতকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া চিরুনি অভিযানে দ্বিতীয় দিন পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৪৮২টি বাড়ি/স্থাপনা/প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ১২৩টি হোল্ডিং ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্টবিহীন এবং ২৭৩টি ভবন সম্প্রসারিত পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জন করে নাগরিক সেবা ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে করের হার না বাড়িয়ে করের পরিধি (Tax Net) বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে ডিএনসিসি। এ লক্ষ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে মাসব্যাপী অঞ্চল-২ (মিরপুর) ও অঞ্চল-৫ (কাওরান বাজার) এ চিরুনি অভিযান চলবে। ডিএনসিসির অন্যান্য অঞ্চলেও পরবর্তীতে এই চিরুনি অভিযান পরিচালিত হবে। এই চিরুনি অভিযানের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, করের পরিধি বাড়ানো; বাদ পড়া হোল্ডিং বা প্রতিষ্ঠানকে করের আওতাভুক্ত করা; রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা; রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা; এবং জনসাধারণকে পৌরকর প্রদানে উৎসাহ প্রদান করা।
চিরুনি অভিযানে কর বহির্ভূত বাড়ি-ঘর/স্থাপনাকে এবং নতুন সৃষ্ট ফ্ল্যাট/বাড়ি-ঘর/স্থাপনা করের আওতায় আনা হবে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্সবিহীন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও আইনসম্মতভাবে ট্রেড লাইসেন্সের আওতায় আনা হবে এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ট্রেড লাইসেন্স দ্বারা পরিচালিত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা ও নবায়নের আওতায় আনা হবে।
চিরুনি অভিযান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে আহ্বায়ক এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলরকে যুগ্ম আহবায়ক করে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। একজন উপকর কর্মকর্তা কমিটির সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। এই কমিটি কর বহির্ভূত বাড়ি-ঘর এবং ট্রেড লাইসেন্সবিহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করবে।