বিস্ময় নিয়ে বিলম্বে ফুটেছে ‘মে ফ্লাওয়ার’

, জাতীয়

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2023-08-31 00:35:54

প্রকৃতিগত কারণেই হয়তো পিছিয়ে যায় ফুলদের ফোটার পালা। একটি গাছে নির্দিষ্ট সময়ে ফুল ফোটার কথা থাকলেও সে ফুলটি আর যথাসময়ে ফোটে না। বিলম্বের এই বিষয়টি উপলব্ধি করে ফুলপ্রেমীরা অবাক হয়ে পড়েন!

‘মে ফ্লাওয়ার’ নাম হলেও সে বিস্ময় নিয়ে ফুটেছে বিলম্বে। গ্রীষ্মের শুরুতে এর ফোটার কথা থাকলেও অবশেষে ফুটলো বর্ষার শেষে।

সম্প্রতি তার বিলম্বিত প্রস্ফুটিত শোভায় মুগ্ধ এক ফুলপ্রেমী। আগস্ট মাসে হঠাৎ ফুলটি জানান দিলো তার অস্তিত্ব ও সৌন্দর্য।

এই মে ফ্লাওয়ারের আরও নাম রয়েছে। সেগুলো হলো- ফায়ার বল, বল লিলি, গ্লোব লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি ইত্যাদি।

মূলত সুদূর আফ্রিকাতে মে ফ্লাওয়ারের আদি নিবাস। এর উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম Haemanthus multiflorus এবং এটি Maryllidaceae পরিবারের উদ্ভিদ। তবে এর বিস্তৃতি রয়েছে পূর্ব ভারত, মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়াতে।

আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে ফুলটি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে বেশ। ফুলপ্রেমীরা তাই বাগানে, বারান্দার টবে, ছাদ বাগানে মে ফ্লাওয়ারের গাছ লাগিয়ে এর বার্ষিক শোভা মাত্র একবার উপভোগ করার সুযোগ পান।

বাগানের শোভা বৃদ্ধি করা মে ফ্লাওয়ার।


 

ফুল শেষে গাছে ফল ধরে। ফল গোলাকার থেকে লম্বা। রং গাঢ়-ধূসর ও শক্ত। কন্দ ও বীজের মাধ্যমে এই ফুলের বংশবিস্তার ঘটে। ফুলের ডাটা ও গাছের গড় উচ্চতা প্রায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

সিলেট শহরের শৌখিন ফুলপ্রেমী তনুশ্রী তনু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এবারই দেখলাম মে ফ্লাওয়ার অনেক দেরিতে ফুটলো। আমি তো ধরেই নিয়েছিলাম আমার মে ফ্লাওয়ারের টব বোধহয় হারিয়ে গেছে। কারণ, এই গাছটি কন্দ থেকে হয় বলে টব দেখে চেনার উপায় নাই যে এটি মে ফ্লাওয়ারের গাছ। তাই মনে হলো- শখের ফুলের এই টবটাকে হারিয়ে ফেলেছি। কিন্তু না! হঠাৎ আগস্টের শেষে দেখি উঁকি দিল সে! একটু একটু করে তার বেড়ে উঠা। সবশেষে লালবৃত্তময় সৌন্দর্য।’

ফুলটির শোভা প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, এই ফুলটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন এবং দুর্লভ। ফুল গন্ধহীন। ফুটন্ত ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। অনেকে ভিড় করেন এর ছবি তুলতে। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান হলেও অপূর্ব। উজ্জ্বল লাল রঙের মাঝে হলুদ-সাদা আভার মিশ্রণে গোলাকার বল আকৃতির ফুল ফোটে। এ ফুলটি অনেকটা কদম ফুলের মতো। তবে আকারে আরও বড়। যে কারও মন জয় করতে পারে। প্রায় দুই-তিন সপ্তাহ ফুলটি স্থায়ী থাকে।

ফুলপরবর্তী গাছ সম্পর্কে এই শৌখিন ফুলপ্রেমী জানান, ফুল ঝরে পড়ার পর পাতার সৌন্দর্য আরও কিছুদিন উপভোগ করা যায়। পাতাগুলো তখন আরও বেশি চকচকে হয়ে উঠে। ফুলের পরেই মাটির নিচ থেকে ৬ থেকে ৮টি বড় বড় পাতা বের হয়। প্রতিটি পাতার দৈর্ঘ্য ৩০ থেকে ৪০ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থ ১২ থেকে ১৪ সেন্টিমিটার হয়।

তনুশ্রী তনু আরও জানান, আরেকটি মজার ব্যাপার হলো- বছরে মাত্র একবার ফোটা এ বৃত্তাকার ফুলটিকে দূর থেকে দেখতে কাঁটাযুক্ত মনে হয়। আসলে একটি কাটাও নেই। আপনি যদি ফুলের পাপড়িগুলোতে স্পর্শ করেন তখন আপনার মনের মাঝে নরম-কোমল অনুভূতি হবে। আপনার আঙুলের ডগায় উঠে আসবে হালকা হলুদ রং। এগুলো পুষ্পরেণু।

এ সম্পর্কিত আরও খবর