গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অভাবের তাড়নায় প্রতিবন্ধী ছেলেসহ এক মা বিষপান করেছেন। এতে দুইজনেরই মৃত্যু হয়েছে।
রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মায়ের ও শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছেলের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন- কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের বর্জাপুর এলাকার মৃত ফজলুল হকের স্ত্রী রাজিয়া খাতুন (৪৫) ও ছেলে সজিব (১৫)।
কাপাসিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন খান বার্তা২৪.কমকে জানান, মৃত রাজিয়ার স্বামী বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গেছেন। প্রতিবন্ধী সজিব ছাড়াও তার মোরশেদ ও খোরশেদ নামে দুই ছেলে রয়েছে। তারা কৃষি কাজ ও রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর মধ্যে খোরশেদ বিয়ে করেছেন। এই দুই ভাই একসঙ্গে খেতেন এবং প্রতিবন্ধী ভাই ও মায়ের খোঁজ নিতেন না। মা রাজিয়া পেটের তাগিদে মানুষের বাড়িতে কাজ করতেন। এই কাজ করে ঠিক মতো তারা খেতে পারতেন না।
তিনি আরও জানান, শনিবার রাতে মা ও ছেলে বিষপানের পর স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ছেলে সজিবের মৃত্যু হয়। মা রাজিয়া খাতুনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার উত্তরার একটি হাসপাতালে নিলে ভোর সাড়ে ৪টার দিকে তারও মৃত্যু হয়। ছেলের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর রাজিয়া খাতুনের মরদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে। বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
বিধবা মা ও প্রতিবন্ধী ছেলে সরকারি ভাতা পেতেন কিনা এমন প্রশ্নে এসআই জানান, এই ঘটনার পর মোরশেদ ও খোরশেদ নামে দুই ছেলে মায়ের সঙ্গে উত্তরার হাসপাতালে থাকায় এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সরকারি ভাতার বিষয়ে বারিষাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আতাউজ্জামান বাবলু বার্তা২৪.কমকে জানান, রাজিয়া খাতুনের স্বামী ফজলুল হক ১৫ বছর আগে মারা গেছেন। তিনি বিধবা ভাতা পাওয়ার যোগ্য ছিলেন। হতদরিদ্র থাকা সত্ত্বেও তিনি কেন ভাতা পাননি সেটি তার জানা নেই।
আর ছেলের প্রতিবন্ধী ভাতা পাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি জানান, সজিব হয়তো প্রতিবন্ধী ভাতা পায়। বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। অভাবের তাড়নায় মা-ছেলের আত্মহত্যার বিষয়টি দুঃখজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।