ভারতে আপনজন হিসেবে পেয়েছিলাম প্রণব মুখার্জিকে: প্রধানমন্ত্রী

, জাতীয়

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-31 17:51:24

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে গভীর দু:খ ও শোক প্রকাশ করে সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জি। সেই মুক্তিযুদ্ধের সময় এমনকি ৭৫এও তিনি আমাদের পাশে ছিলেন। তখন আপনজন হিসেবে পেয়েছিলাম প্রণব মুখার্জি ও তার পরিবারকে। ২০০৭ সালে যখন আমি বন্দি তখনও তিনি আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু নিয়ে আমার ওপর দোষারোপ করল তখনও তিনি সেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করেছেন। সবসময় তিনি বাংলাদেশের পাশে এবং মানুষের কল্যাণে চিন্তা করতেন। আমাদের এই উপমহাদেশে এমন জ্ঞানী রাজনীতিবিদ পাওয়া খুব মুশকিল।

রোববার (০৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে সাহার খাতুন ও ইসরাফিল আলমের ওপর আনিত শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্যু অবধারিত এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু মৃত্যু যে ক্ষত চিহ্নটা রেখে যায় সেটা খুব কষ্টকর। সত্যি এটা দু:খজনক যে আমরা একের পর এক অনেক সংসদ সদস্যকে হারাচ্ছি। প্রতিবারই শোক প্রস্তাব গ্রহণ করতে হচ্ছে। করোনাভাইরাসের পর এটি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। সাথে সাথে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জিকে হারিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালে আমরা ভারতে ছিলাম রিফিউজি হিসেবে। নিজেদের নামটা ব্যবহার করতে পারতাম না। নিরাপত্তার কারণে আমাদের ভিন্ন নামে থাকতে হতো। যখন আমরা দুই বোন নিঃস্ব অবস্থায়, তখন প্রণব বাবু এবং তার পরিবারকে আপনজন হিসেবে পেয়েছিলাম সব সময়। সেটা আমৃত্যু ধারাবাহিকতা বজায় ছিল। তিনি অত্যন্ত জ্ঞানী রাজনীতিবিদ। তিনি অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। প্রতিটি বিষয়ের ওপর তার যে দক্ষতা সব সময় সেটা আমরা দেখেছি। যেকোনো বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারতেন। তিনি কংগ্রেস করলেও সব দল কিন্তু তাকে সম্মান করে। সবাই তাকে দাদা বলেই ডাকেন। তার মৃত্যু এই উপমহাদেশে রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা বিরাট শূন্যতা। তিনি আমাদের দেশের জামাই এটাও কিন্তু ঠিক। তার আত্মার শান্তি কামনা করি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর চলছে। মুক্তিযোদ্ধারা আস্তে আস্তে সবাই আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, হারিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সি আর দত্ত তিনি মুক্তিযোদ্ধা। যখন জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ দেন এবং ২৫ মার্চ যখন গণহত্যা শুরু হয়, যে মুহূর্তে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন তখনই আমাদের সেনা অফিসাররা সাহসী ভূমিকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ঠিক সেইভাবে আবু ওসমান চৌধুরী চুয়াডাঙ্গা তখন কর্মরত ছিলেন। তিনি সাথে সাথে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ওসমান চৌধুরী আর সি আর দত্তও আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। সেই সময় সাহসী ভূমিকা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছিলেন। আজকে তাদের অবদানেই আমরা বিজয়ের জাতি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর