এ্যামফিটামিনের প্রেরককে খুঁজছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 13:29:17

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সমন্বিত অভিযানে জব্দ হওয়া মাদক এ্যামফিটামিন ইয়াবার চেয়ে শক্তিশালী। এটি কোথায় থেকে কিভাবে বাংলাদেশে আসছে তা জানতে না পারলেও গন্তব্য জেনেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

এর আগে বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সমন্বিত অভিযানে জব্দ করা হয় কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়াগামী ১৪টি বড় প্যাকেট। সেখানে ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূল্যের মাদক এ্যামফিটামিন জব্দ করা হয়। মাদকদ্রব্য এ্যামফিটামিন পাউডার পাচারের সাথে জড়িত সন্দিগ্ধ হিসেবে মোট ৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।

আটকরা হলেন, বাংলাদেশ এক্সপ্রেস লি. এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (অর্থ) খন্দকার ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ (৫০) ও সিনিয়র ম্যানেজার (অপারেশন) রাসেল মাহমুদ (৩২)। ইউনাইটেড এক্সপ্রেসের জেনারেল ম্যানেজার গাজী শামসুল আলম (৪৩)। কার্গো হেলপার/লোডার মো. হামিদুল ইসলাম (৩০) ও মো. নজরুল ইসলাম। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচা সদর দফতরে এসব তথ্য জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার।

তিনি বলেন, হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রফতানি কার্গো ভিলেজে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্তৃক বাংলাদেশ বিমানের মাষ্টার এয়ারওয়ে বিল নম্বর ৯৯৭-৬২৪৪-৯১৩৩ এর বিপরীতে রফতানিতব্য ৩৪০ কার্টন পণ্য এসেসমেন্ট এবং বিধি মোতাবেক দৈবচয়নের ভিত্তিতে কায়িক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই মাদক বাংলাদেশে উৎপাদন হয়না। জব্দ মাদক এ্যামফিটামিন চোরাচালানের জন্য ঢাকা রুট হিসেবে ব্যবহৃত না হলেও ইউরোপে বহুল ব্যবহৃত। এই মাদক কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশে এসেছে। যার গন্তব্য ছিল হংকং হয়ে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন। প্রাপক দাস সিং ৩৪ কলম্বিয়া রোড, মেলবোর্ন নারে ওয়ারেন লিআইসি ৩৮০৫। এই মাদকের চোরাচালানের পেছনে যে বা যারাই জড়িত থাকুক না কেনো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ডিজি বলেন, জব্দকৃত এ্যামফিটামিন পাউডারের আনুমানিক কেজি প্রতি মূল্য দুই কোটি টাকা। সে হিসেবে জব্দকৃত ১২ কেজি ৩২০ গ্রাম এ্যামফিটামিন পাউডারের প্রায় ২৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নেপচুন ফ্রেইট লি. এর উত্তরার আশকোনায় একটি অফিস রয়েছে। ঐ অফিসের রুবেল হোসেন নামের এক ব্যক্তি ওই ৭ কার্টনে তৈরি পোশাক-জিন্সের প্যান্ট অস্টেলিয়ায় প্রেরণের জন্য ইউনাইটেড এক্সপ্রেস লিমিটেড এ বুকিং দিয়ে যায়।

তিনি বলেন, মামলা দায়েরের কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পরে ব্যাপকভাবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে এবং এই আন্তর্জাতিক পাচারের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় প্রদান করা হবেনা।

এক প্রশ্নের জবাবে অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলেন, আমরা বাংলাদেশে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর উপর নজরদারি রাখছি। কেউ যাতে কোনোভাবে মিথ্যে তথ্য দিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসকে ব্যবহার করে বিভিন্ন পণ্যের আড়ালে মাদকের চোরাচালান করতে না পারেন।

এক প্রশ্নের জবাবে অধিদফতরের পরিচালক(অপারেশন) ডিআইজি মাসুম রব্বানী বলেন, এই মাদক বাংলাদেশে উৎপাদন হয়না। তবে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার ও চীন উৎপাদন করে থাকে। সেখান থেকে কোনো না কোনোভাবে এটি বাংলাদেশে আসতে পারে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর