চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে একজনকে হত্যা করার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন গাড়ির হেলপার মানিক সরকার।
বৃহস্পতিবার ( ৬সেপ্টেম্বর) মহানগর হাকিম আল ইমরান খানের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে সে রণির সঙ্গে ঝগড়া ঝাটির এক পর্যায়ে লাথি দিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়।
তিন দিনের রিমান্ড শেষে আজ তাকে আদালতে আনা হয়। তিনি ঐ গাড়ির চালকের সহকারি ছিলেন।
গাড়ি ভাড়া নিয়ে রণির সঙ্গে তুমুল ঝগড়া হয়, ফলে সিটি এলাকা আমাদের মারার জন্য উনি মানুষ জড়ো করে। এজন্য গাড়ি থেকে নামার সময় রণিকে লাথি মারে মানিক। এতে সে মাটিতে পড়ে আঘাত পান। গাড়ি চাকায়ও পিষ্ট হয় রণি। এরপরেই যাত্রীরা প্রতিবাদ শুরু করলে ড্রাইভার ও মানিক পালিয়ে যায়।
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) ভোররাত চারটার দিকে লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
পিবিআই সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার হাজিরহাট হাসমত হাওলাদারের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরতলির সিটি গেট এলাকায় চলন্ত বাস থেকে রেজাউল করিমকে (৩৫) ফেলে দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে বাসের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পান রেজাউল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে গাড়ি হেলপার।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২৭ আগস্ট বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরের প্রবেশমুখ সিটি গেটের পাশে গ্ল্যাক্সো কার্যালয়ের সামনে রেজাউল করিমকে লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের একটি বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়।
নিহত রেজাউল সিটি গেট এলাকার কালিরহাটের ওয়ালি উল্লাহর ছেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট সিটি গেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক ঘণ্টা অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম নগরের চার নম্বর যাত্রাপথের লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের বাসটির মালিক মো. শাহাবুদ্দিন। তিনি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। বাসটির কাগজপত্রের মেয়াদ আগামী বছরের ২৯ জুলাই পর্যন্ত রয়েছে।
বাসের সহকারি মো. মানিক সরকার নগরের কৈবল্যধাম আবাসিক এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনিতে বাস করতেন। যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর তিনি এবং চালক গা ঢাকা দেন। এই ঘটনায় চালক এখনো গ্রেপ্তার হননি