তিস্তার নদীগর্ভে ঈদগাহ-মন্দিরসহ শতাধিক বাড়িঘর

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-08-26 13:11:34

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে আবারো জেঁকে বসেছে তীব্র ভাঙন। নদীতে পানি কমলেও থামছে না ঘরবাড়ি হারানো মানুষের আহাজারি। গেল এক সপ্তাহে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়িসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ঈদগাহ মাঠ, মন্দির ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গঙ্গাচড়া উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে নদী ভাঙনের তীব্রতা দেখা গেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, গেল দুই দফার দীর্ঘ স্থায়ী বন্যা শেষে গত কয়েকদিনের অবিরাম বৃষ্টিতে তিস্তার নিম্নাঞ্চল ফের প্লাবিত হয়েছে। সেই সাথে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন।

বর্তমানে তিস্তা তীরবর্তী লক্ষীটারী ইউনিয়নের ইচলী গ্রামে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

একই এলাকার মজিদ মিয়া বলেন, তিস্তা হামাক যা দেচে, তার চ্যায়া বেশি কারি নেচে। এ্যলা তো বন্যা খরা সোগ সময়ে নদী ভাঙে। বারো মাসে হামার দুক্কো। কায়ো কতা দিয়্যা ঠিকমতো নদীর কাম করে নাই।

জানা যায়, চলতি বর্ষায় অব্যহত ভাঙনে তিস্তা মূল গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে আরও দুইটি ধারায় তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন গতিপথ সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে প্রবল ভাঙন। এতে ভেঙে গেছে শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতুর সংযোগ সড়ক ও সেতুর মোকা।

পশ্চিম ইচলী গ্রামের আব্দুল কাদের মোল্লার বলেন, ভাদ্র মাসে সাধারণত তিস্তা শান্ত থাকে। কিন্তু হঠাৎ করে গেল কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ফসলি জমি, মাছের পুকুরসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভেসে গেছে। এখন ইচলী ঈদগাহ্ মাঠের কোন অস্তিত্ব নেই। ভেঙে গেছে পূর্ব ইচলীর মন্দিরটিও।

নদীগর্ভে বিলীন হওয়া ঈদগাহ্ মাঠ সংলগ্ন এতিমখানা ও হাফেজিয়া মাদ্রাসাটিও যে কোনো মুহূর্তে তিস্তায় মিশে যেতে পারে। দ্রুত বেরিবাঁধ দেয়া না হলে ইচলী গ্রামের ৩ হাজারের অধিক পরিবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়বেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

এ ব্যাপারে  লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল হাদী বলেন, অনেক চেষ্টা করেও ভাঙন থেকে ঈদগাহ মাঠটি রক্ষা সম্ভব হয়নি। বিনবিনা থেকে শংকরদহ পর্যন্ত ৭ কিলমিটার বেরিবাঁধ নির্মিত হলে পশ্চিম ইচলি, মধ্য ইচলী ও পূর্ব ইচলি গ্রামে নদী ভাঙন রোধ সম্ভব। অন্যথায় এ বিশাল এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার চরম আশঙ্কা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর