হঠাৎ করে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটিটি মনে করছে এভাবে হঠাৎ পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা, মন্ত্রণালয়কে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আর এভাবে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধে দুই দেশের বন্ধুত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলে মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
রোববার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। তবে মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে ভারত সরকার এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে।
কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য ও মন্ত্রী এ. কে.আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, গোলাম ফারুক খন্দ. প্রিন্স, মো. হাবিবে মিল্লাত, নাহিম রাজ্জাক, কাজী নাবিল আহমেদ এবং নিজাম উদ্দিন জলিল (জন) অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশ ও নিকট প্রতিবেশী দেশসমূহের বর্তমান সম্পর্কের চ্যালেঞ্জসমূহ চিহ্নিত করে পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সম্পর্ক উন্নয়নের প্রক্রিয়া জোরদার করণে করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বাণিজ্য সম্প্রসারণে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে পারস্পরিক ব্যবসায়িক প্রতিনিধি দলের নিয়মিত বৈঠক আয়োজন, স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ ও শীর্ষ পর্যায়ে মতামত বিনিময় করার সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও, বিজিবি ও বিএসএফ দুই পক্ষই সীমান্ত দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
বৈঠকে আরও জানানো হয়, বন্ধুপ্রতিম যে সকল দেশ কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছে ও সফলভাবে পরীক্ষা চালিয়েছে, সেসকল দেশের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের দেশ ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহ আশ্বস্ত করেছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশি মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এছাড়া, আমাদের দেশে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ প্রস্তুতকারী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো যদি কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও পরীক্ষা চালিয়ে সফলতা অর্জন করে, তবে তাদের থেকেও ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা যেতে পারে বলে কমিটি অভিমত ব্যক্ত করে।
বৈঠক শেষে ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় আমাদের বলেছে- ভারত সরকার এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে, নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। আমি তাদের বলেছি প্রত্যাহার করতে হলো কেন, আর দুঃখ প্রকাশই বা করতে হলো কেন? এর ভেতরে কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা দেখতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতের সঙ্গে আমাদের সাফটার যে মিটিং হবে, সেই মিটিংয়ে যেন সীমান্ত হত্যা, পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের বিষয়গুলো জোরেশোরে বলা হয়। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের কারণে আমাদের বন্ধুত্ব কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’
এছাড়া আন্তর্জাতিক রীতি-নীতি অনুযায়ী কোনো মন্ত্রণালয় বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান/দেশ থেকে কোনো প্রকার গিফট/সম্মাননা/সাহায্য গ্রহণের পূর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করতে সুপারিশ করা হয়।