রংপুরে ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড, জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগ

, জাতীয়

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2023-09-01 16:22:34

বাংলা ঋতুর হিসেব বলছে দেড় মাস আগেই শেষ হয়েছে বর্ষাকাল। অথচ বর্ষার প্রভাব এখনো বিরাজমান। ভাদ্র শেষে আশ্বিনেও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝড়ছে। কখনো হালকা থেকে মাঝারি আবার কখনো ভারি বর্ষণ। সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ার সাথে রয়েছে বজ্রপাতও। দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো রংপুরেও দুইদিন ধরে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এতে করে তিস্তা, ঘাঘট, যমুনেশ্বরী নদী বিধৌত নিম্নাঞ্চলে পানিতে তলিয়েছে আবাদি জমি। কোথাও কোথাও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। আর রংপুর নগরীর অলিগলিসহ বিভিন্ন সড়কে ও পাড়া-মহল্লায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।

বুধবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত নয় ঘণ্টায় রংপুরে ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এর মধ্যে শুধু ভোর ৬টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে নগরীর শ্যামা সুন্দরী ও কেডি ক্যানেলে পানি বাড়ার সাথে সাথে হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে নগরীর বেশ কিছু ব্যস্ততম সড়ক ও নিম্নাঞ্চল।

সরেজমিনে দেখা গেছে, মঙ্গলবার ও বুধবারের বৃষ্টিপাতে নগরীর অনেক এলাকা পানির নিচে তলিয়ে যায়। এর ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরীর হাজার হাজার মানুষ। এছাড়াও বৃষ্টিতে নদী বেষ্টিত গঙ্গাচড়া, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া, পীরগাছা ও পীরগঞ্জের অনেক নিচু এলাকায় মাছের ঘের, খাল-বিল, পুকুর ও ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।

ঋতুর হিসেব বলছে দেড় মাস আগেই শেষ হয়েছে বর্ষাকাল

বিশেষ করে বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে রংপুর নগরীর স্টেশন রোড সংলগ্ন পীরপুর রোড আজাদ গ্যারেজের সামনে ও আলমনগর খামারপাড়া, বাবুখাঁ, মুলাটোল থানা রোড, লালবাগ কেডিসি রোড, লালবাগ হাট সংলগ্ন গলি ও ধাপ এলাকার অধিকাংশ নিচু রাস্তায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার পাড়া-মহল্লায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বাসা-বাড়ির ভিতরে বৃষ্টির পানি প্রবেশ করেছে। এতে সড়কে পাড়া-মহল্লায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। শরৎ ঋতুতে হঠাৎ হঠাৎ মেঘ ঝড়া আশ্বিনের বৃষ্টি কারো জন্য স্বস্তির বার্তা হয়ে এসেছে।

মহানগরীর লালবাগ হাট সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শ্বেতফুল আলম গোলাপ বলেন, রংপুরে পানি নিষ্কাশনের জন্য এখনো পর্যাপ্ত ড্রেন তৈরি হয়নি। পাড়া-মহল্লার ছোট ছোট খালগুলো ভরাট আর দখলদারিত্বের কবলে পড়ায় বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই তার বাড়ির আশপাশসহ নগরীর অধিকাংশ নিচু এলাকাতে জলাবদ্ধতা হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

খালগুলো ভরাট আর দখলদারিত্বের কবলে পড়ায় বৃষ্টি হলে জলাবদ্ধতা অনিবার্য

এদিকে আরো তিন চারদিন ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টিপাত হবার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি জানান, বুধবার ভোর ছয়টা থেকে বিকেল তিনটার পর্যন্ত ১১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় থাকার প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে হালকা থেকে ভারী ও অতি ভারীবৃষ্টি হচ্ছে, যা আরও তিন চারদিন অব্যাহত থাকতে পারে। ২৭ সেপ্টেম্বরের বৃষ্টিপাত কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর