দুর্নীতি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহর পরামর্শ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-15 16:15:19

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে আগে নিজের বাড়ি থেকে ঠিক করতে হয়।

তিনি বলেন, পাপিয়াকে ধরে, ওকে ধরে, বিয়ে খেতে না দিয়ে দুর্নীতি বন্ধ করা যাবে না। দুর্নীতি বন্ধ করতে চাইলে আগে নিজের বাড়ি থেকে ঠিক করতে হয়। শুরু করতে হবে আপনার বাড়ি থেকে। আপনার পরিবারের রেহেনা থেকে শুরু করে তাপস কার কী সম্পত্তি আছে সে তথ্য প্রকাশ করতে হবে। তারপর আমাদের সম্পত্তিরও তথ্য প্রকাশ করেন। তারপর প্রশ্ন করেন, জাফরুল্লাহ'র এই সম্পত্তি কোথায় থেকে অর্জিত হল। কেবল অন্যেরটা দেখব, আমারটা দেখবো না এটা হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুর ধানমন্ডি গণস্বাস্থ্য নগর কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার-নিপীড়ন- হয়রানি; ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নূরসহ সারাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নামে মামলা ও সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

সমাজের নানা স্তরে দুর্নীতির উদাহরণ টেনে এনে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'আজকে দুর্নীতি কোথায় পৌঁছেছে, সবচেয়ে বড় দুর্নীতি সরকার স্বয়ং। এখানে মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার হরণ করে, এখানে মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। তার চেয়ে বড় দুর্নীতি কি হতে পারে? মালেকের দুই তলা, সাত তলা দুটা বাড়ি, আফজালের দশটা বাড়ি, বা দশ কোটি থেকে অনেক বেশি দুর্নীতি আমি মনে করি সরকারের। সরকার তার নৈতিক অবস্থান হারিয়েছে।

তিনি বলেন, 'সরকারের অন্যায় আচরণ দেশকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আজকে সরকারকে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই, এখনও সময় আছে, সংশোধন প্রয়োজন'।

ভিপি নূর প্রসঙ্গে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'আজকে আমি খুব বেশি মর্মবেদনায় আছি। আজকে ভিপি নূর… সে যদি অন্যায় করে থাকে, সেটার বিচার হবে। তা বলে তাকে হয়রানি করা যাবে না। ছাত্র রাজনীতি একটা প্রসেশন করে, তাদের বের হতে দেবেন না, সেটা তো হয় না। আপনারা জনগণকে বের হতে দিচ্ছেন না। সেজন্য দেশটা নৈরাজ্যের দিকে চলছে'।

পুলিশি ধরপাকড়ের সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'যখন দেশে অনাচার বেড়ে যায়, ব্যথায় মানুষ নীল হয়ে যায়, তখনই ছাত্রসমাজ জাগে। ছাত্রসমাজ সচেতন করে। যখন চূড়ান্ত রকম অব্যবস্থাপনা তৈরি হয় তখনই ছাত্রসমাজ রাস্তায় নামে। সেদিনও যারা রাস্তায় নেমেছে, তারা কি গাড়ি ভেঙেছে? কাউকে মেরেছে? পুলিশ লাঠি দিয়ে.. সোটা দিয়ে… উল্টা তাদের নামে মামলা দিয়েছে। এ জাতীয় স্বৈরাচার নীতি কখনও দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী এসব বন্ধ করেন, এটা আপনার স্বার্থে। আজকে প্রয়োজন ন্যায়-নীতি, সুষ্ঠু সুশাসন; সুশাসন না হলে হবে না'।

ডিজিটাল আইনকে অগণতান্ত্রিক, অনৈতিক আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, 'ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বিনা বিচারে হত্যার সামিল। আজকে রাজনীতিবিদদের সহনশীল হতে হবে। ক্রিটিসিজম সহ্য করতে হবে'।

বাংলাদেশ সৌদি শ্রমিকদের সঙ্কট বিষয়ে তিনি বলেন, 'যখন করোনা আসে, আমি তখন বলেছিলাম আমাদের উচিৎ হবে, সারা পৃথিবীতে আমাদের এক কোটি শ্রমিক ভাই-বোনেরা বিদেশে আছেন, তাদের চাকরি নিশ্চিত করা। এত দিন তারা আমাদের দেখাশোনা করেছে, সরকারের উচিত হবে কয়েক কোটি ডলার তাদেরকে পাঠানো, দেশগুলোর সাথে সমঝোতা করা'।

এ সম্পর্কিত আরও খবর