রংপুর নগরীতে স্মরণকালের ভয়াবহ বৃষ্টির পানিতে ভরাট হওয়া কেডি খালে পড়ে গিয়ে মা-ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর নিউ জুম্মাপাড়ার তসলিমের খামার সংলগ্ন দোলাপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- শালবন মিস্ত্রিপাড়ার জমির উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া বেগম (৫২) ও ছেলে রিপন ইসলাম (৮)।
রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১'শ বছরের রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় নগরীর মিস্ত্রিপাড়া থেকে জুম্মাপাড়া যাওয়ার প্রায় চার কিলোমিটারের রাস্তাটি এখনো হাঁটু পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মাঝে প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তার দুই পার্শ্বে নিচু এলাকা হওয়ায় অথৈ পানি বিদ্যমান। বিকল্প রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে বেশি সময় লাগার কারণে স্থানীয়রা মাত্র চার ফিট প্রশস্ত এই সরু রাস্তা দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। যার পাশের কেডি খালে এখনও ৭/৮ ফুট পানি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে নিউ জুম্মাপাড়া করিমিয়া মাদ্রাসা পড়ুয়া ছেলে শফিকুল ইসলামকে নিতে তার মা রোকেয়া বেগম ও ছোট ছেলে রিপন ইসলাম মাদ্রসায় যায়। সেখানে থেকে মা ও দুই ছেলে বাসায় ফেরার পথে আল-হেরা স্কুলের কাছে পা পিঁছলে বড় ছেলে কেডি খালে পরে ডুবে যায়। তাকে বাঁচাতে তার ছোট ভাই রিপন পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়লে সেও ডুবে যায়। এ সময় মা রোকেয়া বেগম দুই ছেলেকে উদ্ধার করার জন্য খালের পানিতে ঝাঁপ দেয়। বড় ছেলে শফিকুল কোন রকমে উঠতে সক্ষম হলেও মা রোকেয়া ও ছোট ছেলে রিপন পানিতে তলিয়ে যায়।
পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ও স্থানীয়রা মা-ছেলেকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করে। তবে বড় ছেলে শফিকুল ইসলামকে গুরতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল দশার কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় মা-ছেলের অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন স্থানীয়রা। তারা দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনে কেডি খাল ও শ্যামা সুন্দরী খাল পুনঃখনন ও সংস্কারের দাবি জানিয়েছে।
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরন্নবী ফুলু জানান, মা-ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।