ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় উলফাত আরা তিন্নি (২৪) নামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (০১ অক্টোবর) উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
তিন্নি শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর মেয়ে এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
তিন্নর চাচা হেলাল উদ্দিন জানান, তিন্নির বড় বোন মিন্নির একই গ্রামের নুরুদ্দীনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয়। সংসারে অশান্তি থাকায় প্রায় এক বছর হলো তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে। বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই জামিরুল তার স্ত্রীকে আবার ঘরে নিতে চান। কিন্তু মিন্নি এতে রাজি ছিলেন না। এ কারণে জামিরুল ইসলাম ওই পরিবারের ওপর অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। বাড়িতে কোনো পুরুষ সদস্য না থাকায় পরিবারটি একপ্রকার অসহায় হয়ে পড়েছিল।
তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল ইসলাম বেশ কয়েকজন নিয়ে তিন্নিদের বাড়িতে প্রবেশ করে ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে তারা ফিরে যান। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আবারও জামিরুলরা ওই বাড়িতে আসেন। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় থাকা তিন্নির ঘরে প্রবেশ করেন। পরিবারের অন্য সদস্যরা প্রথমে বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তারা তিন্নিকে একা পেয়ে তার ওপর নির্যাতন চালান। তারা তিন্নিকে ধর্ষণ করে হত্যা করেন। হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ঘরের ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে যান। কিন্তু তার পা খাটের সঙ্গে লাগানো ছিল। হেলাল উদ্দিনের দাবি, এভাবে ঝুললে কেউ মারা যাবে না। তাকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া সদর থানার পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রুমন রহমান লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে আত্মহত্যা। তবে কিছু আলামত পাওয়া গেছে। সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা–নিরীক্ষা পর জানা যাবে আরও কোনো ঘটনা আছে কি না।
এদিকে, ঝিনাইদহ পুলিশের একটি দল ছাত্রীর বাড়ি পরিদর্শন করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। ছাত্রীর বাড়ির দরজায় কোপানোর চিহ্ন, জানালার গ্লাস ভাঙা দেখতে পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।