গত বছরের চেয়ে এবার পাটের দাম দ্বিগুণ

, জাতীয়

জাহিদ হাসান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর | 2023-09-01 21:04:34

বিগত কয়েক বছরের তুলনায় যশোরে এ বছর পাটের বাজার সর্বোচ্চ। মান ভেদে মণ প্রতি পাট ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়েছে। ফলে দ্বিগুণ দাম পেয়ে পাট চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।

শনিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, পাটের ফলন বাম্পার হওয়ায় পাটকাঠির পরিমাণও তুলনামূলক বেশি হয়েছে। আর আশপাশের জেলার পানের বরজে চাহিদা থাকায় পাটকাঠিও ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। যেটি আরও বেশি লাভের যোগান দিচ্ছে। সোনালী আঁশের সাথে পাটকাঠি, সব মিলিয়ে চাষ খরচের দ্বিগুণ মুনাফা কৃষকের ঘরে উঠছে।

জেলায় গত কয়েক বছরের পাটের দাম বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে পাটের বাজার দর সর্বোচ্চ। এই অর্থবছরে মণ প্রতি পাটের দাম ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। এর আগের বার ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাটের বাজার দর ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা। তবে বাজার দর বার বার ওঠা নামা করায় অনেকেই সর্বোচ্চ দামে পাট বিক্রি করতে পারেননি।

এদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পাটের বাজার ছিল একেবারেই নিম্নমুখী। ওই অর্থবছরে মণ প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার উপরে পাটের দাম পাননি কৃষক। তারপরও ধারাবাহিক এই তিন বছরে পাটের আবাদ কমেনি বরং বেড়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যশোর অফিস সূত্রও বলছে, বিগত অনেকগুলো বছরের তুলনায় চলতি বছরে পাটে সর্বোচ্চ মুনাফা ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষক। এ বছর এক বিঘা বা ৩৩ শতক জমিতে পাট উৎপাদন করতে কৃষকের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে কারো কারো ১২ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। জমি ভেদে খরচের এমন তারতম্য হয়। কারণ কিছু জমি আছে যেখানে সেচ দিতে হয়েছে। যার জন্য খরচ কিছুটা বেশি গুনতে হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে জমির দূরত্ব মূল সড়ক থেকে দূরে হওয়ায় বহন খরচ কিছুটা বেশি হয়েছে। যে কারণে খরচের এমন হেরফের হয়েছে। আর খরচের বিপরীতে শুধু পাট বিক্রি করে বিঘা প্রতি কৃষকের ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছে। কারণ এবার বেশির ভাগ আবাদি জমিতে পাটের ফলন বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১২ মণ পর্যন্ত হয়েছে।

এদিকে, বাজারে মান ভেদে পাট ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এক বিঘা জমির পাটকাঠি বিক্রি করে ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার বাড়তি লাভ গুনছেন কৃষকরা।

পাট অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা জাকির হোসেন জুয়েল জানান, উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাট বীজ উৎপাদন প্রকল্পের মাধ্যমে উফশী পাট উৎপাদনের লক্ষ্যে যশোর জেলার ৮টি উপজেলায় ১১ হাজার কৃষকের মধ্যে জন প্রতি ১ কেজি উন্নত পাট বীজ ও ১২ কেজি করে রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও উন্নত পদ্ধতিতে পাট উৎপাদন ও পচানোর লক্ষ্যে জেলার ৫৫০ কৃষককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ের জেলা বাজার কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান বার্তা২৪.কমকে জানান, পাটের এবার অনেক দাম। কৃষকরা যাতে ন্যায্য দাম পান ও ফড়িয়ারা যাতে তাদের ওজনে ফাঁকি দিতে না পারে তার জন্য কাজ করছে তার দপ্তর।

এ সম্পর্কিত আরও খবর