গাইবান্ধায় বন্যা, ত্রাণের খোঁজে ছুটছে মানুষ

, জাতীয়

তোফায়েল হোসেন জাকির, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, গাইবান্ধা | 2023-08-22 01:02:26

চলতি বছরে গাইবান্ধা জেলায় দেখা দিয়েছে কয়েক দফায় বন্যা। বর্তমানে ৫ম দফায় চলছে বন্যা। চলমান এ বন্যায় পানিবন্দী অসহায় মানুষগুলো চরম খাদ্য সংকটে পড়েছে। তারা ত্রাণের খোঁজে ছুটছে এদিক-সেদিক।

রোববার (৪ অক্টোবর) সকালে গাইবান্ধা জেলার বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর, পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ২০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ১১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামের প্রায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গত এক সপ্তাহ ধরে পানি স্থায়ী থাকায় কৃষকের সহস্রাধিক হেক্টর রোপা আমন ধান ও শাক-সবজির জমি তলিয়ে গেছে। এছাড়া ঘরের ভেতর জমে রয়েছে হাঁটু পানি।

বন্যার পানির তীব্র স্রোতে কয়েকটি বাঁধ ভেঙে যাওয়াসহ রাস্তা-ঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভেসে গেছে কোটি টাকা মূল্যের মাছও। সেই সঙ্গে পোল্ট্রি-ডেইরি ফার্মসহ গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছে পানিবন্দী মানুষগুলো।

ঘরের ভেতরে পানি ওঠায় অসহায় মানুষগুলো আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। কর্মহীন এসব মানুষের মধ্যে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে টয়লেট ব্যবস্থা না থাকায় যত্রতত্রভাবে মলত্যাগ করার কারণে পানিবাহিত রোগের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে অভিভাবকরা। সেই সঙ্গে বেড়েছে সাপের উপদ্রপ।

এদিকে এই দুর্যোগের প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্য বাজারে। চাল, শাক-সবজি ও ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। শুধু ভোগ্য পণ্যই নয়, বেড়েছে গো-খাদ্যের দামও।

সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষরা এসব ধকল কিছুতেই সামলাতে পারছে না। সবকিছু হারিয়ে চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষরা। যেন ঘরে ঘরে শুরু হয়েছে হাহাকার। দুর্যোগের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষগুলো খাদ্যের সন্ধানে ছুটোছুটি করছে নানা দিকে। প্রশাসন কিংবা দানশীল ব্যক্তিদের ত্রাণ বিতরণের খবর পেলে ছুটে যাচ্ছে তারা। সেখানে কেউ কেউ ত্রাণ পাচ্ছে, আবার কেউ কেউ খালি হাতে ফিরছে। চাহিদার তুলনায় ত্রাণ সামগ্রী অপ্রতুল রয়েছে বলে বন্যার্ত মানুষের অভিযোগ।

গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ.কে.এম ইদ্রিস আলী বার্তা২৪.কমকে জানান, এ পর্যন্ত ২১৭ মেট্রিক টন জিআর চাল, নগদ ৬ লাখ ৫ হাজার টাকা, শিশু খাদ্য ১ লাখ টাকা ও ১ লাখ টাকার গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার্ত মানুষের জন্য আরও ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন বার্তা২৪.কমকে জানান, ৩টি উপজেলায় ৭টি আশ্রয়ণ কেন্দ্র চালু রয়েছে। এসব কেন্দ্রে ১ হাজার ৩৫৭ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্য সেবায় দুটি মেডিকেল টিম কাজ করছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর