বিশ্বব্যাপী এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গত তিন দিনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমস করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউয়ের খবর জানিয়ে ঘটনাটিকে 'অ্যালার্মিং' বলে উল্লেখ করেছে।
সংবাদ অনুযায়ী, ফ্রান্স, রাশিয়া, ভারত, নেপাল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি প্রদেশে আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড অতিক্রম করেছে। সেসব স্থানে প্রতিদিনের আক্রান্তে সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। ভারতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাত মিলিয়নের বিশাল সংখ্যা ছুঁয়েছে।
নিউইয়র্ক টাইমস'র করোনা ডেটাবেস থেকে দেখা যাচ্ছে, করোনা আক্রান্তের গতি সাম্প্রতিক অতীতের চেয়ে দ্রুততর হয়েছে। বৈশ্বিক পরিসংখ্যানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আক্রান্তের দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে। গত মে মাস থেকেই করোনা আক্রান্তের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে থাকলেও ভারত সেটা অতিক্রম করার পথে।
রোববার (১১ অক্টোবর) ভারতে ৭৪,৩৮৩ জন নতুন করোনা আক্রান্ত রোগী রেকর্ড করা হয়েছে। যার ফলে ভারতে রোগীর সংখ্যা সাত মিলিয়ন স্পর্শ করেছে আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৭.৭ মিলিয়নের বেশি। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, ভারতের আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান হার অব্যাহত থাকলে তা যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাকে অতিক্রম করে বিশ্বের শীর্ষ স্থান দখল করবে।
এদিকে, হিমালয় রাজ্য নেপাল করোনা থেকে আপাতত মুক্ত থাকলেও এখন সেখানে সংক্রমণ বৃদ্ধির স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সেখানে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে এবং অনেক চিকিৎসক ও নার্সের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। দক্ষিণ কোরিয়াও করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে অনেকগুলো স্বাস্থ্য ও সামাজিক বিধি সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। ইসরায়েল তার সেনাবাহিনীকে করোনা মোকাবিলার কাজে নিয়োজিত করেছে। সৈন্যরা নাগরিকদের করোনা পরীক্ষায় সহায়তা দিচ্ছে এবং বন্দর শহর হাইফাতে একটি হাসপাতালের আন্ডারগ্রাউন্ড করোনা ওয়ার্ড পরিচালনায় সাহায্য করছে।
আগেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশ করোনার সম্ভাব্য দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় নানা রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেসব দেশে সামাজিক সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে সমাবেশ ও লোক সমাগম। সামাজিক দূরত্ব ও মাস্কের ব্যবহারের ব্যাপারে কঠোরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা আসন্ন শীতকালে করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির আশঙ্কা করায় বিশ্বব্যাপী করোনার 'সেকেন্ড ওয়েভ' বা 'দ্বিতীয় ঢেউ'-র ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। আক্রান্তের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এই ভীতিকে আরো প্রকটিত করেছে। ফলে একদিকে যেমন বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা তেমনি অন্যদিকে গৃহীত হচ্ছে নানা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ।