রায়হানের মায়ের অনশন ভাঙালেন মেয়র আরিফ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2023-08-31 18:30:22

সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদের মাকে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙালেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

রোববার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে সালমা বেগমের অনশন ভাঙান তিনি। এ সময় মেয়র আরিফ দোষীদের গ্রেফতার ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনে রায়হানের পরিবারের পাশে সিলেটবাসী থাকবে বলেও ঘোষণা দেন।

এরপর বিকাল পৌনে ৫টার দিকে রায়হানের মাকে সান্ত্বনা দিয়ে জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান মেয়র।

এর আগে বেলা ১১টা থেকে বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে আমরণ অনশন শুরু করেন রায়হানের মা সালমা বেগম এবং তার স্বজনরা। অনশনস্থলে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন প্রদর্শন করেন। এ সময় রায়হানের মা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ফাঁড়িতে জানোয়ারের মতো আমাদের আদরের ধন রায়হানকে হত্যা করা হয়েছে। যেখানে তাকে হারিয়েছি, সেখানেই আমরণ অনশন শুরু করেছি। এসআই আকবরসহ সকল আসামি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অনশন চলবেই।’

মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘রায়হান হত্যার বিচারের দাবিতে সিলেট নগরবাসী আপনাদের সঙ্গে আছেন। আমরাও আপনাদের সঙ্গে আছি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই আকবর ও অন্যান্য আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের জন্য আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবো।’

গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসআই আকবরসহ অভিযুক্ত সকলকে গ্রেফতারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন রায়হানের মা সালমা বেগম। এ আল্টিমেটামের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ফের তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ কর্মসূচি শনিবার শেষ হয়। এরপর আজ অনশনে বসেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর ভোরে রায়হান আহমদ (৩৩) নামে সিলেট নগরের আখালিয়ার এক যুবক নিহত হন। পরিবার দাবি করে, সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে প্রাণ হারান রায়হান।

পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় হেফাজতে মৃত্যু আইনে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট মহানগর পুলিশ।

এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। এই তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটুচন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করা হয়।

এ মামলায় ২০ অক্টোবর পুলিশ কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও ২৪ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশীদকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েছে পিবিআই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর