ছেলের মুক্তি চায় মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-18 14:15:01

একমাত্র ছেলে আলহাজ মনিরুজ্জামান মনিরের নিঃশর্ত মুক্তি ও বাসায় হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের (মৃত) স্ত্রী সাবিহা খাতুন।

সোমবার (৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

লিখিত অভিযোগে সাবিহা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আমার শ্বশুর হাজি চিনু মিয়া (মৃত) মোহাম্মদপুর, আদাবর, মিরপুর, নিউমার্কেট এলাকায় টানা ৩৭ বছর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছে। আর আমার একমাত্র ছেলে আলহাজ মো. মনিরুজ্জামান মনির আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আমার ছেলে সর্বদা নিজেকে মানবসেবায় নিয়োজিত রাখে। ইতোমধ্যে সে মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকার রাস্তাঘাট মেরামতসহ ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরি, মাদক ব্যবসা ইত্যাদি বন্ধ করতে নানা ধরনের কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। ঢাকা উদ্যানের সকল রাস্তার সিকিউরিটি বাড়াতে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে চুরি ও ছিনতাই অনেকটা কমে গেছে। লকডাউনের সময়ও তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে গরীব-দুঃখীদের মাঝে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করেছেন।

এছাড়াও মানুষের বিপদে আপদে সব সময় এগিয়ে যায়। তার এসব কর্মকাণ্ডের বাধা হয়ে দাঁড়ায় ফজলুল করিম বাদল, বরকত, আবু সায়েম শাহীনগং। তারা এলাকায় নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। তারা এলাকার প্লট মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে অবৈধ গ্যাস ও ওয়াসা সংযোগ দিত। সিসি ক্যামেরার কারণে তাদের এসব কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়। এছাড়া ঢাকা উদ্যান সমিতি অফিস জোরপূর্বক দখল করার চেষ্টা করে সাবেক সেক্রেটারি ফজলুল করিম বাদল। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করা হয়। যার মামলা নং- ৩৪(১১)২০। তারিখ- ৬/১১/২০। শুধু তাই নয়, চুরি ও ছিনতাই কমে যাওয়ার কারণেও তারা অনেক ক্ষিপ্ত হয়। কারণ, তারা চোর ও ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে ভাগ পেতো। এর ফলে ফজলুল করিম বাদল, বরকত, আবু সায়েম শাহীনগং ষড়যন্ত্র করে মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাজানো একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যার প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মনিরুজ্জামান মনিরকে কয়েকজন সাদা পোশাকে এসে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। বর্তমানে তাকে মোহাম্মদপুর থানায় রাখা হয়েছে। আজ সোমবার তাকে আদালতে নেয়া হবে বলে জানতে পেরেছি।

সংবাদ সম্মেলনে সাবিহা খাতুন বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা শুধুমাত্র আমার ছেলেকে গ্রেফতার করিয়েই ক্ষান্ত হয়নি। গত শনিবার (৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে দুর্বৃত্তরা আমার বাসায় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় তারা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করে। রুমে ঢুকতে না পারায় আমি প্রাণে বেঁচে যাই। ওই সময় আমি ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে অসুস্থ হয়ে যাই। দুর্বৃত্তরা তখন বাসার গার্ড আলামিন রুকুকে বেধড়ক মারধর করে। এবং আমার বাসার জানালা-দরজা ভেঙ্গে তছনছ করে। পাশের একটি ছোট ঘরে আগুনও লাগিয়ে দেয়। অল্পের জন্য আমরা বড় ধরণের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাই। হামলার বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং-৪০।

তিনি আরো বলেন, এমতাবস্থায় আমরা সন্ত্রাসীদের ভয়ে মানবেতর জীবন অতিবাহিত করছি। যেকোনো সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের বড় ধরণের ক্ষতিসাধন করতে পারে। এজন্য সন্ত্রাসীদের হাত থেকে রেহাই পেতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। পাশাপাশি আমার ছেলের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হাবিবুর রহমান, আব্দুল মান্নান, আবুল কাসেম, মোঃ আমিনুল ইসলাম মানিক, মোঃ জয়নার আবেদীন, আবুল হোসেন, রেজাউর রহমানসহ প্রায় পাঁশ শতাধিক এলাকাবাসী।

সংবাদ সম্মেলন শেষে মু‌ক্তি‌যোদ্ধা ও এলাকাবাসীরা ডিআরইউ এর সামনে বিক্ষোভ মি‌ছিল করে। মি‌ছিল শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও ক‌রেন তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর