প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যার বর্ণনা দিয়েছে পুলিশের হাতে গ্রেফতার বাচ্চু মিয়া (৫০) ও আমির হামজা (৩৫)। শিশুটি ধর্ষণের কথা ওর বাবাকে জানিয়ে দেবে বলায় দুইজন মিলে কুপিয়ে হত্যা করে তাকে।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের একটি গ্রামে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নৃশংস এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার শিকার হতভাগ্য শিশুটি স্থানীয় একটি মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনোহরগঞ্জের নাথেরপেটুয়া তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. জামির হোসেন জিয়া গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশের খবরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের ওই গ্রামে শিশুটির বাবা-মার ঘরের খাটের নিচ থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই শিশু মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
এদিকে, ঘটনারদিন রাতেই হালিম বিক্রেতা বাচ্চু মিয়াকে সন্দেহভাজন হিসেবে অভিযুক্ত করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহত শিশুর বাবা।
পুলিশ প্রথমে বাচ্চু মিয়াকে আটক করে গত বুধবার সকালে তাকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়। পরে আদালতে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমতে বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় একই গ্রামের মোস্তফা ভূঁইয়ার ছেলে আমির হামজাকে। সে গ্রামের ধান খেতে পানি সেচের ব্যবসা করে।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সামছুজ্জামান ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. জামির হোসেন জিয়া জানান, ঘটনার দিন সকাল ১১টার দিকে বাচ্চু মিয়া ও আমির হামজা শিশুটির বাড়িতে ঢুকে। শিশুটির মা সিলেটে থাকে- এ তথ্য নিশ্চিত হয়ে বাচ্চু ও হামজা নিহত শিশুর সপ্তম শ্রেণি পড়–য়া বড়বোনকে ধর্ষণের ‘টার্গেট’ করেছিল। কিন্তু সে তখন স্কুলে থাকায় বাড়িতে একা পেয়ে মাদ্রাসা পড়–য়া ছোটবোনকেই ধর্ষণ করে দুই লম্পট। আহত শিশু ধর্ষণের কথা তার বাবাকে জানিয়ে দেবে বললে ঘরে থাকা বটি নিয়ে তার মুখসহ বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে বাচ্চু। পরে আমির হামজাও তাকে কোপায়।
দুই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আমির হামজাকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে নেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, হাওলা ইউনিয়নের ওই গ্রামের পূর্ব-উত্তর পাশের ফসলের মাঠের মাঝখানে বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন নিহত শিশুর বাবা। হত্যার ঘটনার এক সপ্তাহ আগে সিলেটে বেড়াতে যান তার স্ত্রী। গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে তিনি মাঠে কৃষি কাজ করতে ঘর থেকে বের হন। এ সুযোগে শিশুটিকে ধর্ষণ ও হত্যা করে দুই লম্পট বাচ্চু ও হামজা।