রোববার দ্বিতীয় তিস্তা সেতুর উদ্বোধন, যোগাযোগ এখনও বিচ্ছিন্ন

রংপুর, জাতীয়

রেজাউল করিম মানিক, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 08:37:04

লালমনিরহাট: আগামীকাল রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লালমনিরহাটে অবস্থিত দ্বিতীয় তিস্তা সেতুটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য সেতুটিকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। সেতুর উত্তর পাশে তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। লালমনিরহাট এলজিইডি বিভাগ থেকে উদ্বোধনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এ সেতুটি চালুর মধ্য দিয়ে রংপুর অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, এ সেতু নির্মাণের মাধ্যমে লালমনিরহাটের ৪টি উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রসার ঘটেছে। এছাড়া অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ঘটবে এক নীরব বিপ্লব।

এদিকে উদ্বোধনের আগেই গতকাল শুক্রবার রাতে এই সেতুর উত্তরের অংশে একটি সংযোগ সড়ক ও সংযোগ সেতু তিস্তার প্রবল স্রোতে ধসে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলজিইডি বিভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সংযোগ সড়ক ও সেতুটি রক্ষার।

লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম জাকিউর রহমান জানান, দ্বিতীয় তিস্তা সেতু উদ্বোধনের জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আর ভেঙে যাওয়া সংযোগ সেতু ও সড়ক মেরামতের কাজ চলমান রয়েছে। তিস্তার প্রবল স্রোতে যদি কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়, তাহলে উদ্ধোধন অনুষ্ঠানের আগেই কাজ শেষ হবে বলে মনে করছেন এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও জানান, প্রতিনিয়তই তিস্তা তার গতিপথ পরিবর্তন করছে। এ কারণেই হুমকিতে রয়েছে সংযোগ সড়ক ও সংযোগ সেতুগুলো। কাজের কোনো প্রকার অনিয়ম হয়নি বলেও দাবি করেন এই প্রকৌশলী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রংপুর-লালমনিরহাট জেলার মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনতে তিস্তা নদীর ওপর ৮৫০ মিটার দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১২ সালে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠের জনসভা থেকে উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লালমনিরহাটের চারটি উপজেলাসহ বৃহত্তর রংপুরের প্রায় ৫০ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল কাকিনা-মহিপুর দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতু। ২০১৪ সালের ৩১ জুন নির্মাণ কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়িয়ে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স নাভানা কন্সট্রাকশন। এরই মধ্যে সেতুর কাজ বুঝে নিয়েছেন সরকারি বাস্তবায়নকারী বিভাগ এলজিইডি।

জানা গেছে, ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য দ্বিতীয় তিস্তা সড়ক সেতুটি নির্মিত হয়েছে। একই অর্থে সেতুটি রক্ষার জন্য উভয় পাশে ১৩০০ মিটার নদী শাসন বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। সেতুর সঙ্গে লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়কের কাকিনা থেকে সেতু পর্যন্ত ৫.২৮০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে দুইটি প্যাকেজে ৪ কোটি ৪৬ লাখ এবং এ সড়কে ২টি ব্রিজ ও তিনটি কালভার্ট নির্মাণে ৩টি প্যাকেজে ৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সেতু থেকে রংপুরের অংশে ৫৬৩ মিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় এক কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ সেতু বাস্তবায়নের দায়িত্ব পান লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর। আর এ কাজের অগ্রগতি মনিটরিং করা হয় লালমনিরহাট এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর থেকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর