মাত্র দুইঘণ্টার হাট!

খুলনা, জাতীয়

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-18 16:09:24

নড়াইল: নড়াইল শহরের প্রাণকেন্দ্র রুপগঞ্জে সপ্তাহের দুইদিন রোববার ও বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ৯ পর্যন্ত বসে পান বিক্রির হাট। মাত্র দুইঘণ্টার হাট হলেও ওই দুইদিন সকাল হলেই সেখানে ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে মুখরিত হয়ে ওঠে। সাধারণত অন্যান্য হাট সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বসে। 

জানা গেছে, এবার জেলায় ৪৮৮ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। নড়াইল সদর উপজেলা, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলায় পানের এই আবাদ হয়। শহরের রুপগঞ্জ হাট, লোহাগড়ার এ্যাড়েন্দা হাট ও কালিয়া উপজেলার ডাকবাংলোয় পাইকারি ও খুচরা ভাবে পান বিক্রি হয়ে থাকে। পান পোন হিসাবে বিক্রি হয়ে থাকে। চারটি পানে এক গোণ্ডা। আর বিশ গোণ্ডায় এক পোন এবং এক পোন (৮০টি) পানের মূল্য আকার ভেদে ৬০ টাকা থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। এ বছর চাষিরা তাদের পানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি।

সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের পানচাষি প্রকাশ বিশ্বাস বলেন,‘পান চাষ আমাদের পূর্বপুরুষের পেশা। তাই আমিও পান চাষ করি। পান চাষের টাকা দিয়েই আমার সংসার চলে।’

খলিসাখালী গ্রামের বিলাস দাস বলেন,‘আমি আমার এক একর জমিতে পানের চাষ করেছি। এতে পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকার পান বিক্রি করেছি। আরও প্রায় দুই লাখ টাকার পান বিক্রি করা যাবে।’

লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর গ্রামের হরিপদ বিশ্বাস বলেন,‘আমি ১০০ পোন পান নিয়ে হাটে এসেছিলাম। পানের সাইজ (আকার) বড় হওয়ায় পাইকারি ১০৫ টাকা করে পোন বিক্রি করছি। এতে আমাদের খরচ বাদে ভালোই লাভ থাকে।’

পানের পাইকারি ব্যবসায়ী সুনিল বিশ্বাস বলেন,‘আমরা নড়াইলসহ বিভিন্ন হাট থেকে পান কিনে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করি। এক পোন পান ঢাকায় নিয়ে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি।’

কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ৪৮৮ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৬০ হেক্টর, লোহাগড়া উপজেলায় ৬৩ হেক্টর এবং কালিয়া উপজেলায় ২৬৫ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বার্তা২৪.কমকে জানান, পান একটি অর্থকরী ফসল। জেলার বিভিন্ন স্থানে পানের আবাদ করা হয়ে থাকে। সুস্বাদু হওয়ায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় নড়াইলের পানের চাহিদা রয়েছে। পানের বাজার মূল্য ভালো থাকায় চাষিদের লাভ বেশি হচ্ছে। তাই দিন দিন পানের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর