‘রংপুরের জন্য তো অনেক কাজ করে দিচ্ছি। ….. মুই ক্যাংকরি কমু বাহে, ভোট তো পাই না। নৌকায় ভোট পাই না। তার কী হবে? ভোট তো চলে যায় লাঙ্গলে!’ অনেকটা ঠাট্টা করেই কথাগুলো বলেছেন রংপুরের পুত্রবধূ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর মুখে রংপুরের স্থানীয় ভাষাশুনে গণভবনে মৃদু হাসির রোল উঠে। তখন প্রধানমন্ত্রী আবার বলেন, ‘রংপুরের লোক এখানে কে কে আছেন? মুই ক্যাংকরি কও বাহে, হামাক তো ভোট দেয় না। আশা করি, এবার নৌকায় ভোট পাব আমরা।’
রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গাজীপুর ও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রংপুরের স্থানীয় ডাক্তার শর্মাপিতা ঘোষের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মুখ্যসচিব মো. নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় আনুষ্ঠানিক বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী গাজীপুর এবং রংপুরের স্থানীয় জনগণ এবং প্রশাসনের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময় শুরু করেন করেন।
রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর রংপুরের কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদ প্রথমে একজন স্থানীয় বাসিন্দাকে কথা বলার সুযোগ করে দেন। এরপর স্থানীয় আরেক বাসিন্দার অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ পেতে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি চান কমিশনার। জবাবে প্রধানমন্ত্রী কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল আলীম মাহমুদকে বলেন, আচ্ছা আপনি দেন। এত দিলেও কী হবে, রংপুর তো ভোট দেয় না আমাদের!
এরপর ডাক্তার ও সংস্কৃতিকর্মী শমার্পিতা ঘোষ রংপুরবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘ফুলছড়ি ঘাটে বালাশী ব্রিজটা যদি করেন, তাহলে রংপুর থেকে ঢাকার যোগাযোগ মাত্র চার ঘণ্টায় হবে। আমরা আশা করি, রংপুরবাসীর জন্য আপনি (প্রধানমন্ত্রী) এটা করে দেবেন’।
তার প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি একটু বলতে চাই, এই ব্রিজ করা কিন্তু সম্ভব না। তার কারণ, যমুনা নদীর ওপর ব্রিজ করবার জন্য স্বাধীনতার পর জাতির পিতা যখন ১৯৭৩ সালে জাপান সফরে যান, তখন জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয় তার। তখন তারা ফিজিবিলিটি স্টাডি করে যমুনা নদীর ওপর। ওই ফিজিবিলিটি স্টাডির মাধ্যমেই কিন্তু এখন যেখানে যমুনা সেতুটা হওয়ার সেখানেই সেতুটা হয়েছে। তবে বালাশী ঘাট থেকে আমরা বাহাদুরাবাদ ঘাট পর্যন্ত একটা ফেরি সার্ভিস যেন পুনরায় যাতে চালু হয়, সেই চেষ্টা করছি। আর একটা সমীক্ষা আমরা চালাচ্ছি যে নদীর তলদেশ দিয়ে কোনো টানেল করা যায় কি না। যদি টানেল করা যায়, সেটা আরও কার্যকর হবে।’
এরপরে গাজীপুর পুলিশ লাইনস মাঠে উপস্থিত সেখানকার পুলিশ কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।