‘আগুন খালি গরিবগোই সব কাইড়া লয় গো’

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-27 02:32:26

‘আগুন খালি গরিব মানুষগোই সব কাইড়া লয় গো, আমরা মানুষ না আমরা গরিব। পিন্দোনের কাপড় ছাড়া আর কিছুই লইয়া বাইর হইতে পারলাম না।’

সোমবার মধ্যরাতে মহাখালী সাততলা বস্তির আগুনে নিজের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে এমন করেই আক্ষেপ করছিলেন শাহিদা বেগম নামে গার্মেন্টস কর্মী এক বৃদ্ধা।

সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও খাবার জোটেনি তার। সকালে বস্তির পাশের এক দোকানদার একটা কলা আর রুটি দিয়েছে। তাও খাওয়া হয়নি। নাতিকে খাইয়ে দিয়েছেন। তার অভিযোগ এলাকার নেতাকর্মীরা খাবার দিলেও ক্ষতিগ্রস্তরা পাচ্ছেন না। বস্তির বাইরের মানুষ এসে খাবার নিয়ে যাচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়েও খাবার পাননি শাহিদা।

এক ছেলে, এক মেয়ে আর নাতিকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মহাখালী সাততলা বস্তির একটা ঘরে থাকতেন তিনি। কাজ করেন তেজগাঁওয়ের আরমানা গার্মেন্টসে।

তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাইতে যখন আগুন লাগে তখন আমরা ঘুমাইতেছিলাম। কিছুই বুঝবার পারি নাই। যখন বুঝবার পারলাম তখন আর কিছুই লইয়া বাইর হওনের সময় আছিল না। খালি দেহডা লইয়া বাইর হইছি। কপাল খারাপ হলে যা হয়। অনেক কষ্টে সোনার কানের জিনিস করছিলাম তাও গেল।

বস্তির ১০০ টিরও বেশি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকান পুড়েছে ৩৫টি। সেই সঙ্গে পুড়েছে শেষ সম্বলটুকু

কষ্ট করে রোজগার করা ১৫ হাজার টাকা আর স্বর্ণের কানের দুল হারিয়ে এখন তার একটাই চাওয়া একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই আর তিনবেলা তিনমুঠো খাবার।

তিনি বলেন, সরকার যদি দয়া কইরা একটু থাকোনের ব্যবস্থা কইরা দেয় তাতেই আমরা খুশি। যেখানে কাম করি সেই জায়গা থেকে কোন সাহায্য পামু না।

শাহিদার মতো রহিমা নামের একজন দীর্ঘদিন ধরে শাপলা বস্তিতে থাকেন কাজ করেন বাসাবাড়িতে। সব হারিয়ে দিশেহারা রহিমা বলেন, এই শীতের দিনে খোলা আকাশের নিচে আমরা কেমনে থাকমু। ঘরের খেতা বালিশ তাও তো পুড়ে শ্যাষ।

২৪ নভেম্বর রাতে লাগা আগুনে সাহিদা রহিমার মতো অন্তত ১০০ ঘরের বাসিন্দাদের এমন হাহাকার।

এ বিষয়ে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নাসির পুড়ে যাওয়া বস্তি পরিদর্শন এসে বার্তা২৪.কম’কে বলেন, অগ্নিকাণ্ডে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের কেউই না খেয়ে থাকবে না। প্রাথমিকভাবে তাদের জন্য আমরা থাকার ব্যবস্থাও করছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর