পুকুরের মাছের সঙ্গে মুক্তা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুরের কালিচরণপুর গ্রামের বাসিন্দা সাজ্জাদুল রহমান তারেক।
মুক্তা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশায় এরই মধ্যে তিনি প্রায় ২০ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করে তা বাজারজাতকরণের জন্যে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তা রফতানি করা যাবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি। এরই মধ্যে দেশের বেশ কিছু প্রথম শ্রেণির কোম্পানি তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলেও জানান মুক্তাচাষি তারেক।
এরই মধ্যে এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে তারেকের এই ঝিনুক চাষ। তারেকের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে জেলা মৎস্য বিভাগ। বিশ্বব্যাংক রাজবাড়ী মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে আর্থিক অনুদানও দিয়েছে। তারেকের ঝিনুক চাষ দেখে অনেকেই এখন স্বপ্ন দেখছেন মাছের সঙ্গে ঝিনুক চাষের।
সাজ্জাদুল রহমান তারেক বার্তা২৪.কম-কে জানান, ২০১৮ সালের দিকে ভারতের একটি মুক্তা গবেষণা কেন্দ্র (সেপা) থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন তিনি। এরপর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সফলতার। নিজের পুকুরে মাছ চাষের পাশাপাশি মুক্তা চাষ শুরু করেন তিনি।
প্রাথমিকভাবে ২০১৯ সালে ১৪ হাজার ঝিনুক নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। প্রথমে স্থানীয় বিভিন্ন পুকুর থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করেন। এরপর ঝিনুকের মধ্যে ডাইজ স্থাপন ও টিস্যু প্রতিস্থাপন করে বিভিন্ন ধরনের নিউক্লিয়াস পদ্ধতিতে মুক্তা চাষ শুরু করেন।
পরে স্থানীয়ভাবে আরও ২০ হাজার ঝিনুক সংগ্রহ করা হয় মুক্তা চাষের জন্য। প্রথমে ৯ লাখ টাকা দিয়ে মুক্তার চাষ শুরু করা হয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে পুরোপুরি মুক্তা চাষে পরিপক্কতা পাবে বলে জানান তারেক ।
তিনি আরও জানান, প্রথম ১৪ হাজার ঝিনুকের মধ্যে বেশ কিছু ঝিনুক মারা গেছে। তাতে মোট ঝিনুকের প্রায় ১০ শতাংশ মারা গিয়েছে। বর্তমান মুক্তার বাজার মূল্য প্রতিটি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত রয়েছে। আমি প্রত্যাশা করছি আগামী ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ২৫ লাখ টাকার মুক্তা বিক্রি করতে পারবো।
রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব পাল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, মুক্তার চাষ একটি লাভবান প্রকল্প। গয়না হিসেবে বাজারে মুক্তার বেশ কদর রয়েছে। মাছ চাষের পাশাপাশি সে মুক্তার চাষ করছে। আমরা নিয়মিত মৎস্য বিভাগ থেকে তাকে পরামর্শ দিচ্ছি। তাছাড়া এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংক তাকে আর্থিক সহায়তা হিসেবে রাজবাড়ী মৎস্য বিভাগের মাধ্যমে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে।